নারায়ণগঞ্জ ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিদ্ধিরগঞ্জে লাইসেন্স ছাড়াই চলছে ট্রাস্ট হসপিটাল, রোগী দেখেন ভুয়া চিকিৎসক

 অনলাইন ভার্সন
  • ০৯:৪৮:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪৬২

"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

সিদ্ধিরগঞ্জে ট্রাস্ট হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে ভুয়া ডাক্তার দিয়ে। এসব ভুয়া ডাক্তারের অপচিকিৎসায় রোগীদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। জটিল অপারেশন করছে হসপিটালের হাতুড়ি ডাক্তাররা। আবেদন করে এখনো লাইসেন্স না পেলেও নিশ্চিন্তে চালিয়ে যাচ্ছে চিকিৎসা কার্যক্রম।

জানা গেছে, মাদানীনগর মাদরাসার সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে শাহ আলম ভবনে ১০ বেডের এই হসপিটালটি করেছিলেন গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার তরগাও গ্রামের আব্দুস ছামাদের ছেলে ডা. ইমরান হোসেন। তিনি গত ২৩ এপ্রিল হসপিটালটি ৩৭ লাখ টাকা দাম নির্ধারণ করে বাঘেরহাট জেলার ফকিরহাট থানার পিলজংগ গ্রামের কাজী আব্দুস সাত্তারের ছেলে কাজী মনজুর রহমানের কাছে বিক্রি করে দেন।

স্বাস্থ্য নীতিমালা অনুযায়ী ১০ বেডের একটি হসপিটাল পরিচালনার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত ৬ জন এমবিবিএস ডাক্তার ও ৬ জন ডিপ্লোমাধারী নার্স প্রয়োজন। তার মধ্যে একজন এমবিবিএস ডাক্তার ও ২ জন ডিপ্লোমাধারী নার্স সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকা প্রয়োজন। এক্স-রে কক্ষের দেয়াল কমপক্ষে ১০ ইঞ্জি ও অপরেশন থিয়েটার মানসম্মত থাকা অবশ্যক।

সরেজমি দেখা গেছে, হাসপাতালে স্বাস্থ্য নীতিমালা অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত এমবিবিএস ডাক্তার ও ডিপ্লোমাধারী নার্স নেই। পরিচালক কাজী মনজুর রহমানের স্ত্রী ডা. হাসনা আক্তার ও ডা. দেলোয়ার হোসেন হসপিটালটির অংশিদার। তারাই রোগী দেখেন। তবে মাঝে মাঝে কয়েকজন ভাড়া করা ডাক্তার হসপিটালটিতে বসে রোগী দেখেন। এসব ডাক্তারের বিএমডিসি রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার কত তা বলতে পারেননি হসপিটালটির পরিচালক মনজুর রহমান। অপারেশন করা হয় ভাড়া করা ডাক্তার দিয়ে।

পাইনাদী এলাকার একজন রোগীর স্বজন ছালমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, হসপিটালটিতে সার্বক্ষণিক কোন এমবিবিএস ডাক্তার ও ডিপ্লোমাধারী নাস থাকে না। রোগী দেখেন ভুয়া ডাক্তাররা। পরিচালক মনজুর রহমানের স্ত্রী ডা. হাসনা আক্তার রোগী দেখলেও তিনি সবসময় থাকেন না। হসপিটালটিতে আমার স্বামীর পাইলস অপরেশন করতে গিয়ে রক্তনালী কেটে ফেলা হয়েছিল। পরে স্বামীর অবস্থা গুরুতর হলে তাকে ডেমরার বাঁশেরপুল মেডি-হেলথ স্পেশালাইজ্ড হসপিটাল্স এন্ড ডিজিটাল ডায়গনস্ট্রিক সেন্টারে নিয়ে ডাক্তার এমজি ফেরদৌসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করি।

ডাক্তার ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ট্রাস্ট হসপিটালে রোগীর যে অপারেশন করা হয়েছিল তা সঠিক হয়নি। রক্তনালী কেটে ফেলায় রক্ত করণ হচ্ছিল। সময় মত নিয়ে আসায় আল্লাহর রহমতে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

অভিযোগ জানা গেছে, মনজুর রহমান পেশায় একজন ব্যবসায়ী। হসপিটালটি কিনে তার স্ত্রী ডা. হাসনা আক্তার ও দেলোয়ার হোসেনকে অংশিদার বানিয়ে ভুয়া ডাক্তার দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। হসপিটালটির লাইসেন্স নেই। চিকিৎসার নামে রোগীদের জীবন বিপন্ন করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে মনজুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন স্বাস্থ্য নীতিমালা মেনেই হসপিটাল চালাচ্ছি। এর বেশিকিছু তিনি বলতে চাননি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ড. এ এফ এম মুশিউর রহমান বলেন, হসপিটালটি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এখনো লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। তবে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যেতে কোন বাধা নেই। স্বাস্থ্য নীতিমালা অমান্য হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

👍ফেসবুকে আলোকিত শীতলক্ষ্যা

সিদ্ধিরগঞ্জে লাইসেন্স ছাড়াই চলছে ট্রাস্ট হসপিটাল, রোগী দেখেন ভুয়া চিকিৎসক

০৯:৪৮:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ অক্টোবর ২০২২
"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

সিদ্ধিরগঞ্জে ট্রাস্ট হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে ভুয়া ডাক্তার দিয়ে। এসব ভুয়া ডাক্তারের অপচিকিৎসায় রোগীদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। জটিল অপারেশন করছে হসপিটালের হাতুড়ি ডাক্তাররা। আবেদন করে এখনো লাইসেন্স না পেলেও নিশ্চিন্তে চালিয়ে যাচ্ছে চিকিৎসা কার্যক্রম।

জানা গেছে, মাদানীনগর মাদরাসার সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে শাহ আলম ভবনে ১০ বেডের এই হসপিটালটি করেছিলেন গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার তরগাও গ্রামের আব্দুস ছামাদের ছেলে ডা. ইমরান হোসেন। তিনি গত ২৩ এপ্রিল হসপিটালটি ৩৭ লাখ টাকা দাম নির্ধারণ করে বাঘেরহাট জেলার ফকিরহাট থানার পিলজংগ গ্রামের কাজী আব্দুস সাত্তারের ছেলে কাজী মনজুর রহমানের কাছে বিক্রি করে দেন।

স্বাস্থ্য নীতিমালা অনুযায়ী ১০ বেডের একটি হসপিটাল পরিচালনার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত ৬ জন এমবিবিএস ডাক্তার ও ৬ জন ডিপ্লোমাধারী নার্স প্রয়োজন। তার মধ্যে একজন এমবিবিএস ডাক্তার ও ২ জন ডিপ্লোমাধারী নার্স সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকা প্রয়োজন। এক্স-রে কক্ষের দেয়াল কমপক্ষে ১০ ইঞ্জি ও অপরেশন থিয়েটার মানসম্মত থাকা অবশ্যক।

সরেজমি দেখা গেছে, হাসপাতালে স্বাস্থ্য নীতিমালা অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত এমবিবিএস ডাক্তার ও ডিপ্লোমাধারী নার্স নেই। পরিচালক কাজী মনজুর রহমানের স্ত্রী ডা. হাসনা আক্তার ও ডা. দেলোয়ার হোসেন হসপিটালটির অংশিদার। তারাই রোগী দেখেন। তবে মাঝে মাঝে কয়েকজন ভাড়া করা ডাক্তার হসপিটালটিতে বসে রোগী দেখেন। এসব ডাক্তারের বিএমডিসি রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার কত তা বলতে পারেননি হসপিটালটির পরিচালক মনজুর রহমান। অপারেশন করা হয় ভাড়া করা ডাক্তার দিয়ে।

পাইনাদী এলাকার একজন রোগীর স্বজন ছালমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, হসপিটালটিতে সার্বক্ষণিক কোন এমবিবিএস ডাক্তার ও ডিপ্লোমাধারী নাস থাকে না। রোগী দেখেন ভুয়া ডাক্তাররা। পরিচালক মনজুর রহমানের স্ত্রী ডা. হাসনা আক্তার রোগী দেখলেও তিনি সবসময় থাকেন না। হসপিটালটিতে আমার স্বামীর পাইলস অপরেশন করতে গিয়ে রক্তনালী কেটে ফেলা হয়েছিল। পরে স্বামীর অবস্থা গুরুতর হলে তাকে ডেমরার বাঁশেরপুল মেডি-হেলথ স্পেশালাইজ্ড হসপিটাল্স এন্ড ডিজিটাল ডায়গনস্ট্রিক সেন্টারে নিয়ে ডাক্তার এমজি ফেরদৌসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করি।

ডাক্তার ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ট্রাস্ট হসপিটালে রোগীর যে অপারেশন করা হয়েছিল তা সঠিক হয়নি। রক্তনালী কেটে ফেলায় রক্ত করণ হচ্ছিল। সময় মত নিয়ে আসায় আল্লাহর রহমতে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

অভিযোগ জানা গেছে, মনজুর রহমান পেশায় একজন ব্যবসায়ী। হসপিটালটি কিনে তার স্ত্রী ডা. হাসনা আক্তার ও দেলোয়ার হোসেনকে অংশিদার বানিয়ে ভুয়া ডাক্তার দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। হসপিটালটির লাইসেন্স নেই। চিকিৎসার নামে রোগীদের জীবন বিপন্ন করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে মনজুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন স্বাস্থ্য নীতিমালা মেনেই হসপিটাল চালাচ্ছি। এর বেশিকিছু তিনি বলতে চাননি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ড. এ এফ এম মুশিউর রহমান বলেন, হসপিটালটি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এখনো লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। তবে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যেতে কোন বাধা নেই। স্বাস্থ্য নীতিমালা অমান্য হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"