০৭:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নাসিম ওসমানের ‘১০ম’ মৃত্যুবার্ষিকী

  • ১১:২৩:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৩৭৮

"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

বিশেষ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনের সাবেক চারবারের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত জননেতা একেএম নাসিম ওসমানের ‘১০ ম’ মৃত্যু বার্ষিকী আজ মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল। ২০১৪ সালের এই দিনে ভারতের দেরাদুনে চিকিৎসাকালীন অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

একেএম নাসিম ওসমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আপাদমস্তক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ^াসী ছিলেন। তিনি শুধু মহান ৭১’এ প্রত্যক্ষ মুক্তিযুদ্ধই করেননি, ১৯৭৫’এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার পর বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে অংশ নিয়েছিলেন প্রতিরোধ যুদ্ধেও।

নাসিম ওসমান ১৯৫৩ সালের ৩১ জুলাই নারায়ণগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত (মরোণত্তর) প্রয়াত একেএম শামসুজ্জোহা ছিলেন ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। মা মরহুম বেগম নাগিনা জোহাও ছিলেন ভাষা সৈনিক। স্বদালাপী নাসিম ওসমান ছিলেন পরিবারের বড় সন্তান।

ছাত্র জীবনে পরিবারের ভুমিকায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নাসিম ওসমান আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে রাজনৈতিন জীবন শুরু করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নাসিম ওসমান পালিয়ে ভারতে চলে যান। সেখানে তিনি গেরিলা যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে ফিরে এসে যুদ্ধ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৪ আগষ্ট রাতে নাসিম ওসমানের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর জেষ্ঠ্য পুত্র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, যে অনুষ্ঠানে তোলা ছবিটি ছিল শেখ কামালের জীবনের তোলা শেষ আলোকচিত্র। পরদিন তথা ১৫ই আগষ্ট ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর একটি অনুষ্ঠান থাকায় নাসিম ওসমানের অনুরোধ সত্বেও শেখ কামাল ওই রাতে নারায়ণগঞ্জে আসেননি।

তিনি নারায়ণগঞ্জে এলে বাংলাদেশের ইতিহাস হয়তো অন্যভাবেও রচিত হোত। ১৯৭৫’র ১৫ই আগষ্ট নিজের নবপরিণীতা স্ত্রীকে রেখে পরিবারের সকল নারী সদস্যদের অলংকার সংগ্রহ করে নাসিম ওসমান চলে যান বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী হলেও শুধুমাত্র তৎকালীন সময়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতি ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সুরক্ষার কথা ভেবে কৌশলগত কারণে আশির দশকের শুরুতে নাসিম ওসমান যোগ দেন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে।

তিনি আমৃত্যু জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। তিনি যথাক্রমে ১৯৮৬, ১৯৮৮, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে মোট ৪ বার জাতীয় পার্টি ও মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমানের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় বন্দরের নাসিম ওসমান উচ্চ বিদ্যালয়ে মিলাদ ও দোয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এতিমখানা, মসজিদসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া তার পরিবারের পক্ষ থেকেও পবিত্র কোরআন খতম ও দোয়া এবং ছোট ভাই ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমানের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কয়েক হাজার শ্রমিক ও এতিমদের নিয়ে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়ায় অংশ নেয়ার আকুল আবেদন জানানো হয়েছে।


"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

👍ফেসবুকে আলোকিত শীতলক্ষ্যা

You cannot copy content of this page

বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নাসিম ওসমানের ‘১০ম’ মৃত্যুবার্ষিকী

১১:২৩:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

বিশেষ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনের সাবেক চারবারের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত জননেতা একেএম নাসিম ওসমানের ‘১০ ম’ মৃত্যু বার্ষিকী আজ মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল। ২০১৪ সালের এই দিনে ভারতের দেরাদুনে চিকিৎসাকালীন অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

একেএম নাসিম ওসমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আপাদমস্তক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ^াসী ছিলেন। তিনি শুধু মহান ৭১’এ প্রত্যক্ষ মুক্তিযুদ্ধই করেননি, ১৯৭৫’এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার পর বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে অংশ নিয়েছিলেন প্রতিরোধ যুদ্ধেও।

নাসিম ওসমান ১৯৫৩ সালের ৩১ জুলাই নারায়ণগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত (মরোণত্তর) প্রয়াত একেএম শামসুজ্জোহা ছিলেন ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। মা মরহুম বেগম নাগিনা জোহাও ছিলেন ভাষা সৈনিক। স্বদালাপী নাসিম ওসমান ছিলেন পরিবারের বড় সন্তান।

ছাত্র জীবনে পরিবারের ভুমিকায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নাসিম ওসমান আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে রাজনৈতিন জীবন শুরু করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নাসিম ওসমান পালিয়ে ভারতে চলে যান। সেখানে তিনি গেরিলা যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে ফিরে এসে যুদ্ধ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৪ আগষ্ট রাতে নাসিম ওসমানের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর জেষ্ঠ্য পুত্র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, যে অনুষ্ঠানে তোলা ছবিটি ছিল শেখ কামালের জীবনের তোলা শেষ আলোকচিত্র। পরদিন তথা ১৫ই আগষ্ট ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর একটি অনুষ্ঠান থাকায় নাসিম ওসমানের অনুরোধ সত্বেও শেখ কামাল ওই রাতে নারায়ণগঞ্জে আসেননি।

তিনি নারায়ণগঞ্জে এলে বাংলাদেশের ইতিহাস হয়তো অন্যভাবেও রচিত হোত। ১৯৭৫’র ১৫ই আগষ্ট নিজের নবপরিণীতা স্ত্রীকে রেখে পরিবারের সকল নারী সদস্যদের অলংকার সংগ্রহ করে নাসিম ওসমান চলে যান বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী হলেও শুধুমাত্র তৎকালীন সময়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতি ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সুরক্ষার কথা ভেবে কৌশলগত কারণে আশির দশকের শুরুতে নাসিম ওসমান যোগ দেন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে।

তিনি আমৃত্যু জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। তিনি যথাক্রমে ১৯৮৬, ১৯৮৮, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে মোট ৪ বার জাতীয় পার্টি ও মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমানের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় বন্দরের নাসিম ওসমান উচ্চ বিদ্যালয়ে মিলাদ ও দোয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এতিমখানা, মসজিদসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া তার পরিবারের পক্ষ থেকেও পবিত্র কোরআন খতম ও দোয়া এবং ছোট ভাই ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমানের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কয়েক হাজার শ্রমিক ও এতিমদের নিয়ে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়ায় অংশ নেয়ার আকুল আবেদন জানানো হয়েছে।


"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"