নারায়ণগঞ্জ ১০:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাথায় বোঝা যাদের ভরসা- এমনতাবস্থায় বিপাকে তারা

 অনলাইন ভার্সন
  • ০১:৩৪:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১
  • / ১১৫৫

"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

আলোকিত শীতলক্ষ্যা রিপোর্ট : সারাদেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে কঠোর লকডাউন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় বন্ধ রয়েছে মার্কেট ও গণপরিবহন। রাস্তায় মানুষের চলাচলও রয়েছে সীমিত। সামনে ঈদুল ফিতর এমনতাবস্থায় মাথার পোজা যাদের ভরসা সেই কুলিরা পড়েছে বিপাকে। মাত্র ৫০ টাকা ১০০টাকার বিনিময়ে নির্দ্বিধায় যারা হাসিমুখে ছোট-বড় বোঝা মাথায় নিয়ে ছুটেন তাদের আজ করুন দশা। ভালো নেই তারা। কষ্টে কাটছে তাদের দিন।

বুধবার (২১ এপ্রিল) সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গাউছিয়া বিখ্যাত কাপড়ের মার্কেটের সামনে মলিন মুখে বসে থাকতে দেখা যায় একদল কুলিকে। যারা সব সময় ব্যস্ত থাকতো মার্কেটের মালামাল ট্রাকে লোড-আনলোড করতে ও ব্যবসায়ী-ক্রেতাদের বস্তা মাথায় নেয়ার কাজে। কঠোর লকডাউনে মার্কেট বন্ধ থাকায় তারা আজ বেকার হয়ে পড়েছে। ঘরে দেখা দিয়েছে তাদের অভাব-অনটন। চিন্তা আর পেরেশানী যেন তাদের পিছুই ছাড়ছে না। কপালে দেখা যায় চিন্তার ভাজ।

এসময় কথা হয় শফিউল্লাহ নামে এক কুলির সাথে তিনি বলেন, খুব চিন্তায় আছি, মার্কেট বন্ধ। মালের কোন গাড়িও আসে না। বেকার হয়ে বসে আছি। এখন বাসা ভাড়াই বা দিব কেমনে আর চলমু কেমনে বুঝতাছি না। লকডাউনের খবরে আমাদের গ্রামের অনেকে চলে গেছে। কিন্তু আমি ভাবছি সামনে ঈদ। যদি খুলে? তাহলে তো কিছু টাকা ইনকাম করতে পারব, সে আশায় এখানে পড়ে আছি। অনে হুনতাছি লকডাউন নাকি আরো বাড়ায় দিছে। অনে বাড়িতে যাইতে পারি না আর ডাল-ভাতও খাইতে পারি না।

৩০হাজার নারীর ভাগ্যের হাট গাউছিয়া কাপড়ের মার্কেটে কুলির কাজ করে সংসার চালায় বলে জানায় রহিম। তিনি বলেন, ভাই এই লকডাউন থাকায় পরিবার নিয়ে অনাহারে অর্ধহারে দিন কাটাচ্ছি। জানি না কতো দিন এভাবে থাকতে হবে? মার্কেট না খুললে পরিবার নিয়ে আরো বিপদে পড়বো। আজিজুল নামে গাউছিয়া মার্কেটের এক কুলি বলেন, গ্রামে আমার জমিজামা বলতে কিছুই নেই। আমার গ্রামের অনেক নারী-পুরুষ এই রূপগঞ্জের গাউছিয়া মার্কেট থেকে কাপড় কিনে গ্রামে ব্যবসা করে। তাদের মুখে এই গাউছিয়া মার্কেটের কথা অনেক শুনতাম।

তাই প্রায় ৩ বছর আগে পরিবার নিয়ে এই রূপগঞ্জে এসে এই গাউছিয়া মার্কেটে কুলির কাজ করি। কুলির কাজ করেই বাসা ভাড়া, আমার ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া ও সংসার চালাতাম। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কমপক্ষে ৭‘শ থেকে ১ হাজার টাকার ইনকাম করতাম।
এখন এই লকডাউনে মার্কেট বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে বড়ই সমস্যায় পড়ছি। চলছে লকডাউন তবুও মার্কেটের সামনে এসে বসে আছি।

এ বিষয়ে গাউছিয়া মার্কেটের ম্যানেজার আব্দুল আউয়াল ভূঁইয়া বলেন, সরকার যেদিন বলবে মার্কেট সেদিন খুলা হবে। এর আগে খোলা কোনভাবে সম্ভব না।

কুলিদের বিষয়ে তিনি বলেন, কুলিরা সবচেয়ে বেশি অসহায়। মার্কেট না খুললে ব্যবসায়ীদের যেমন ক্ষতি হবে তার চেয়ে ডাবল কুলিদের ক্ষতি হবে।


"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

ফেসবুকে👍আপনার_বিজ্ঞাপন

মাথায় বোঝা যাদের ভরসা- এমনতাবস্থায় বিপাকে তারা

০১:৩৪:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১
"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

আলোকিত শীতলক্ষ্যা রিপোর্ট : সারাদেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে কঠোর লকডাউন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় বন্ধ রয়েছে মার্কেট ও গণপরিবহন। রাস্তায় মানুষের চলাচলও রয়েছে সীমিত। সামনে ঈদুল ফিতর এমনতাবস্থায় মাথার পোজা যাদের ভরসা সেই কুলিরা পড়েছে বিপাকে। মাত্র ৫০ টাকা ১০০টাকার বিনিময়ে নির্দ্বিধায় যারা হাসিমুখে ছোট-বড় বোঝা মাথায় নিয়ে ছুটেন তাদের আজ করুন দশা। ভালো নেই তারা। কষ্টে কাটছে তাদের দিন।

বুধবার (২১ এপ্রিল) সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গাউছিয়া বিখ্যাত কাপড়ের মার্কেটের সামনে মলিন মুখে বসে থাকতে দেখা যায় একদল কুলিকে। যারা সব সময় ব্যস্ত থাকতো মার্কেটের মালামাল ট্রাকে লোড-আনলোড করতে ও ব্যবসায়ী-ক্রেতাদের বস্তা মাথায় নেয়ার কাজে। কঠোর লকডাউনে মার্কেট বন্ধ থাকায় তারা আজ বেকার হয়ে পড়েছে। ঘরে দেখা দিয়েছে তাদের অভাব-অনটন। চিন্তা আর পেরেশানী যেন তাদের পিছুই ছাড়ছে না। কপালে দেখা যায় চিন্তার ভাজ।

এসময় কথা হয় শফিউল্লাহ নামে এক কুলির সাথে তিনি বলেন, খুব চিন্তায় আছি, মার্কেট বন্ধ। মালের কোন গাড়িও আসে না। বেকার হয়ে বসে আছি। এখন বাসা ভাড়াই বা দিব কেমনে আর চলমু কেমনে বুঝতাছি না। লকডাউনের খবরে আমাদের গ্রামের অনেকে চলে গেছে। কিন্তু আমি ভাবছি সামনে ঈদ। যদি খুলে? তাহলে তো কিছু টাকা ইনকাম করতে পারব, সে আশায় এখানে পড়ে আছি। অনে হুনতাছি লকডাউন নাকি আরো বাড়ায় দিছে। অনে বাড়িতে যাইতে পারি না আর ডাল-ভাতও খাইতে পারি না।

৩০হাজার নারীর ভাগ্যের হাট গাউছিয়া কাপড়ের মার্কেটে কুলির কাজ করে সংসার চালায় বলে জানায় রহিম। তিনি বলেন, ভাই এই লকডাউন থাকায় পরিবার নিয়ে অনাহারে অর্ধহারে দিন কাটাচ্ছি। জানি না কতো দিন এভাবে থাকতে হবে? মার্কেট না খুললে পরিবার নিয়ে আরো বিপদে পড়বো। আজিজুল নামে গাউছিয়া মার্কেটের এক কুলি বলেন, গ্রামে আমার জমিজামা বলতে কিছুই নেই। আমার গ্রামের অনেক নারী-পুরুষ এই রূপগঞ্জের গাউছিয়া মার্কেট থেকে কাপড় কিনে গ্রামে ব্যবসা করে। তাদের মুখে এই গাউছিয়া মার্কেটের কথা অনেক শুনতাম।

তাই প্রায় ৩ বছর আগে পরিবার নিয়ে এই রূপগঞ্জে এসে এই গাউছিয়া মার্কেটে কুলির কাজ করি। কুলির কাজ করেই বাসা ভাড়া, আমার ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া ও সংসার চালাতাম। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কমপক্ষে ৭‘শ থেকে ১ হাজার টাকার ইনকাম করতাম।
এখন এই লকডাউনে মার্কেট বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে বড়ই সমস্যায় পড়ছি। চলছে লকডাউন তবুও মার্কেটের সামনে এসে বসে আছি।

এ বিষয়ে গাউছিয়া মার্কেটের ম্যানেজার আব্দুল আউয়াল ভূঁইয়া বলেন, সরকার যেদিন বলবে মার্কেট সেদিন খুলা হবে। এর আগে খোলা কোনভাবে সম্ভব না।

কুলিদের বিষয়ে তিনি বলেন, কুলিরা সবচেয়ে বেশি অসহায়। মার্কেট না খুললে ব্যবসায়ীদের যেমন ক্ষতি হবে তার চেয়ে ডাবল কুলিদের ক্ষতি হবে।


"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"