বিএনপি নেতাকর্মীদের ক্ষোভ, দলে সৃষ্টি হচ্ছে বিভেদ
সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের দোসররা, সুবিধাবাদী বিএনপি নেতাদের ঘনিষ্টজন হয়ে উঠছে
- ১২:৪২:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৪৭৮
সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাব পুলিশের নিরবতায় এলাকায় ফিরছে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নেতাকর্মীরা। সুবিধাভোগী বিএনপি নেতাদের সাথে আঁতাত করে পানি আক্তারের সন্ত্রাসী বাহীনারা আইলপাড়া এলাকায় এসে ভিবিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় প্রায় তিন ডজন এজাহার নামীয় মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী মাদকে ডিলার কিশোরগ্যাং এর ডন পানি আক্তারের সন্ত্রাসী বাহিনী পুনরায় তার সম্রাজ্য দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
বহুল বিতর্কিত যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতির ঘনিষ্ট সহযোগী ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামীরা এলাকায় ঘুরছে বীর দাপটে। এমন অভিযোগ রয়েছে পানি আক্তারের অন্যতম সহযোগী বিহারী ক্যাম্প এলাকার মাসুমের বিরুদ্ধে তিনি পানি আক্তারের হয়ে ইপিজেডে ৪টি কারখানা নিয়ন্ত্রন করছে।
তার মধ্যে রয়েছে মারুইশা, ইউনেস্কো, ডায়মন্ড, ঊর্মি এই কারখানার আয়ের অর্থ বিএনপির কিছু নেতাদের নিয়ে ভাগ বাটোয়ার করে বাকি অংশ নিয়ে যায় পানি আক্তার। আদমজী ইপিজেডে বেশীর ভাগ কারখানা আওয়ামী নেতা কর্মীদের নিয়ন্ত্রনে এর মধ্যে বিএনপির নেতা কর্মীরা তাদের কাঁধে ভর করে ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করছে বলে জানিছেন ইপিজেডের সাধারন ব্যবসায়ীরা।
তবে পানি আক্তারের সন্ত্রাসী বাহীনি এলাকায় ফিরে আসায় আতষ্কিত ৬নং ওয়ার্ড আইল পাড়া, সুমিল পাড়া, ও বিহারী ক্যাম্পের সাধারন মানুষ তাদের অভিযোগ অত্র এলাকার কিছু সুবিধাবাদী বিএনপি নেতাকর্মীরা এই আওয়ামী লীগের এসব দোসরদের বোগল তলায় রেখে নিজেদে স্বার্থ হাসিল করছে।
এদিকে আদমজী, নতুন বাজার ও বিহারী ক্যাম্প এলাকার অন্যতম সমস্যা হলো মাদক। যার ভয়াল থাবা থেকে নিষ্কৃতি পাচ্ছেনা যুব সমাজও। এ অবস্থায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। মাদকের নিষ্ঠুর যাত্রায় কেউ লাখ লাখ টাকার ব্যবসা ধ্বংস করে সর্বশান্ত হয়ে জড়িয়েছেন ভয়ংকর অপরাধ চক্রে। অনেক পরিবার তছনছও হয়ে গেছে।
অভিযোগ রয়েছে পানি আক্তারের মাদকের বাড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রন করছে বিহরী ক্যাম্পের খাটিয়া গুড্ডু, আজগর, আকরাম, শামীম, কাদির, রনি, স্বপন, নিয়াজ, সালমান, জুম্মন, সুনু, রাসেল, শওকত, রমজান, বাট্টু, গালিব, ভুলা মেম্বারসহ আরো অকেই।
উল্লেখ্য গত (২৫ নভেম্বর) সোমবার সকালে নাসিক ৬নং ওয়ার্ড আদমজী বিহারী ক্যাম্প এলাকা থেকে মাদকের ডিলার খাটিয়া গুড্ডু, আনার, হায়দার, রনি, বালুর মাঠ থেকে আজগর, শাহাজাদা ভুলা মেম্বার, নিয়জ, এদের নেতৃতে অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ প্লাটফর্মের নামে সাধারণ মানুষকে শাহবাগে গণজমায়েতের উদ্দেশ্যে ৩টি বাসে করে অন্তত ১৫০ জন বিহারী ক্যাম্পের সহজ সরল মানুষদের ভুল বুঝিয়ে এক লাখ টাকা করে ঋণ দেওয়া হবে বলে তাদের কাজ থেকে ৩০০ টাকা করে নিয়ে ঢাকার রাজু ভাস্কর্যে জড়ো করে।
আরজু ও ইরফান নামে দুই বিহারী জানায়, বিহারী ক্যাম্প থেকে ৩টি বাসে করে প্রায় ১৫০ জন লোক নিয়ে তাদেরকে ঋণ দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাজ থেকে ৩০০ টাকা করে নিয়ে ঢাকায় যায়।
একটি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডে ত্রাসের রাজত্ব কামেয় করেছিল যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতি। গড়ে তুলেছিল বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। আদমজী ইপিজেডসহ সমস্ত এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তার করে চাঁদাবাজি, জমি দখল, চোরাই জ্বালানি তেল ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতেন মতি বাহিনী। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মতি ও তার বাহিনী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
মতি পালিয়ে যাওযার পর সুবিধাবাদী বিএনপি কথিপয় নেতারা রাতারাতি মতির সকল অবৈধ আয়ের উৎস দখল করে নেয়। তারা তাদের দখল বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে মতির ঘনিষ্ট সহযোগীদের সাথে গোপন আতাঁত করে।
সূত্রটি জানায়, নাসিক ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ডের সুবিধাবাদী কয়েকজন বিএনপি নেতা মতির সম্রাজ্যে রাজত্ব করতে গোপন আঁতাত করেছেন মতির ঘনিষ্ট সহযোগী ও সন্ত্রাসী বাহিনীর কমাণ্ডারদের সাথে। ফলে তাদের পরোক্ষ মদদে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি মতির অন্যতম সহযোগী আক্তার হোসেন ওরফে পানি আক্তার, তাঁতীলীগ নেতা লিটন ওরফে গুজা লিটন, গোলাম মোহাম্মদ খান গুলো, ইউসুফ খান, আবু খান, নিয়াজ খান ও বিহারী কলোনির মাদক সম্রাট নাহিদসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আওয়ামী লীগের এসব দোসররা এখন সুবিধাবাদী বিএনপি নেতাদের ঘনিষ্টজন হয়ে উঠেছে। কাজ করছে তাদের পকেট ভারী করার হাতিয়ার হিসেবে। ফলে ত্যাগী ও পরিক্ষিত বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। দলে সৃষ্টি হচ্ছে বিভেদ।