১১:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ফতুল্লায় ফ্ল্যাটে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে ২ নারীর মৃত্যু-আহত ১৫

  • ১০:৫৬:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ নভেম্বর ২০২১
  • / ৪৮৮

আলোকিত শীতলক্ষ্যা : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি ভবনের ফ্ল্যাটে গ্যাসলাইন থেকে নির্গত জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে দুই নারীর মৃত্যু সহ আহত হয়েছে ১৫ জন। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত ৮জন ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

নিহতরা হলেন, মায়া রানী (৪০) ও মঙ্গলী রানী (৩৫)। নিহতরা কেউ দুর্ঘটনাকবলীত বাড়ির নয়। এদের মধ্যে মায়া রানী পাশের সুমির বাড়ির ভাড়াটিয়া আর মঙ্গলী রানী পথচারী। আহতদের মধ্যে মায়া রানীর দুই মেয়ে বৃস্টি (১৪), সৃস্টি (১০) ও এক ছেলে নির্জয় (৩)সহ জুমা (২১), রুমা (১২), সোহেল (২৬), তুলশি (৫০) ও দেড় বছরের শিশু বিশালীর নাম জানা গেছে। বিস্ফোরণে ওই ফ্ল্যাটের পাঁচটি কক্ষসহ পাশের আরও তিনটি বাড়ির দেয়াল চূর্ণ হয়ে গেছে।

শুক্রবার (১২ নভেম্বর) ভোরে ফতুল্লার লালখাঁর মোড়ে মোক্তার মিয়ার পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। দুর্ঘটনাকবলিত ওই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়ে ভবনটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোর ৬টার সময় বিকট শব্দে ফ্ল্যাটটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশের আরও তিনটি বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিস্ফোরণে ফ্ল্যাটের পাঁচটি কক্ষ ও পাশের বাসার তিনটি বাড়ির তিনটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে।

এ ঘটনায় ঘুমন্ত অবস্থায় মায়া রানী ঘটনাস্থলেই দেয়ালের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। এসময় মায়া রানীর দুই মেয়ে বৃস্টি, সৃস্টি ও এক ছেলে নির্জয়সহ জুমা, রুমা, সোহেল, তুলশি ও দেড় বছরের শিশু বিশালী আহত হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

এছাড়াও বিস্ফোরনের সময় মঙ্গলী রানী তার মেয়ে পূর্ণীমাকে নিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন। তখন বিস্ফোরণের দেয়ালের ইট বালু উড়ে এসে উপড়ে পড়ে গুরুতর আহত হয় মঙ্গলী এবং মাথায় ও পায়ে আঘাত পায় তার মেয়ে পূর্নীমা। তাদের দুজনকে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলী রানী মারা যান এবং পূর্নীমাকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে।

ওই সময় ঘটনার পাশের সুমির বাড়ির ভাড়াটিয়া বিনয় তার স্ত্রী নিপা ও তাদের দুই শিশু সন্তান ঘুমন্ত অবস্থায় দেয়াল চাপা পড়েন। এতে বিনয় ও তার শিশু কন্যার মাথায় আঘাত লেগে কেটে যায়। স্ত্রী ও আরেক শিশু পুত্র সামান্য আঘাত পেয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, দুর্ঘটনাকবলিত ওই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ওই ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়ে ভবনটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং আহত ব্যক্তিদের দুই পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে।

ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, দুই নারী নিহত হয়েছে। ৮জন ঢাকা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও কয়েকজন আহত হয়েছে তারা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন জানান, রান্নাঘরের গ্যাস কোনো কক্ষে জমে ছিল। তা থেকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

সংবাদটি ▼ শেয়ার করুন

👍ফেসবুকে আলোকিত শীতলক্ষ্যা

ফতুল্লায় ফ্ল্যাটে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে ২ নারীর মৃত্যু-আহত ১৫

১০:৫৬:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ নভেম্বর ২০২১

আলোকিত শীতলক্ষ্যা : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি ভবনের ফ্ল্যাটে গ্যাসলাইন থেকে নির্গত জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে দুই নারীর মৃত্যু সহ আহত হয়েছে ১৫ জন। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত ৮জন ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

নিহতরা হলেন, মায়া রানী (৪০) ও মঙ্গলী রানী (৩৫)। নিহতরা কেউ দুর্ঘটনাকবলীত বাড়ির নয়। এদের মধ্যে মায়া রানী পাশের সুমির বাড়ির ভাড়াটিয়া আর মঙ্গলী রানী পথচারী। আহতদের মধ্যে মায়া রানীর দুই মেয়ে বৃস্টি (১৪), সৃস্টি (১০) ও এক ছেলে নির্জয় (৩)সহ জুমা (২১), রুমা (১২), সোহেল (২৬), তুলশি (৫০) ও দেড় বছরের শিশু বিশালীর নাম জানা গেছে। বিস্ফোরণে ওই ফ্ল্যাটের পাঁচটি কক্ষসহ পাশের আরও তিনটি বাড়ির দেয়াল চূর্ণ হয়ে গেছে।

শুক্রবার (১২ নভেম্বর) ভোরে ফতুল্লার লালখাঁর মোড়ে মোক্তার মিয়ার পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। দুর্ঘটনাকবলিত ওই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়ে ভবনটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোর ৬টার সময় বিকট শব্দে ফ্ল্যাটটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশের আরও তিনটি বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিস্ফোরণে ফ্ল্যাটের পাঁচটি কক্ষ ও পাশের বাসার তিনটি বাড়ির তিনটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে।

এ ঘটনায় ঘুমন্ত অবস্থায় মায়া রানী ঘটনাস্থলেই দেয়ালের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। এসময় মায়া রানীর দুই মেয়ে বৃস্টি, সৃস্টি ও এক ছেলে নির্জয়সহ জুমা, রুমা, সোহেল, তুলশি ও দেড় বছরের শিশু বিশালী আহত হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

এছাড়াও বিস্ফোরনের সময় মঙ্গলী রানী তার মেয়ে পূর্ণীমাকে নিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন। তখন বিস্ফোরণের দেয়ালের ইট বালু উড়ে এসে উপড়ে পড়ে গুরুতর আহত হয় মঙ্গলী এবং মাথায় ও পায়ে আঘাত পায় তার মেয়ে পূর্নীমা। তাদের দুজনকে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলী রানী মারা যান এবং পূর্নীমাকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে।

ওই সময় ঘটনার পাশের সুমির বাড়ির ভাড়াটিয়া বিনয় তার স্ত্রী নিপা ও তাদের দুই শিশু সন্তান ঘুমন্ত অবস্থায় দেয়াল চাপা পড়েন। এতে বিনয় ও তার শিশু কন্যার মাথায় আঘাত লেগে কেটে যায়। স্ত্রী ও আরেক শিশু পুত্র সামান্য আঘাত পেয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, দুর্ঘটনাকবলিত ওই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ওই ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়ে ভবনটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা এবং আহত ব্যক্তিদের দুই পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে।

ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, দুই নারী নিহত হয়েছে। ৮জন ঢাকা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও কয়েকজন আহত হয়েছে তারা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন জানান, রান্নাঘরের গ্যাস কোনো কক্ষে জমে ছিল। তা থেকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

সংবাদটি ▼ শেয়ার করুন