বাবা-মা, সন্তানরা মারা যাওয়ার পর ভাইটিই ছিল ভরসা
- ১০:৪৩:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১
- / ৫২০
আলোকিত শীতলক্ষ্যা : বাবা-মা আর সন্তানরা মারা যাওয়ার পর একমাত্র ভাইটি ছিল ভরসা, পোষাক কারখানার শ্রমিক তাসনুরের। এখন তাকেও হারাতে বসেছেন তিনি। বোনের হাতে ভাইয়ের আইডি কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে খোঁজে ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি।
জানা গেছে, ছোটবেলায় মাকে হারান তাসনুর বেগম। এক মাস আগে বাবাও না ফেরার দেশে চলে যান। তাসনুরের দুটি সন্তান ছিল, কিন্তু তারাও দুর্ঘটনায় মারা যায়। একমাত্র ভাই মহিউদ্দিনই ছিল তার ভরসা।
রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার ৭/তলা ভবনের চারতলায় চকলেট বানানোর কাজ করতেন মহিউদ্দিন। বৃহস্পতিবার ওই ভবনের নিচতলায় আগুন লাগার পর থেকে বন্ধ রয়েছে তার মুঠোফোন।
পরে রাতভর ভবনের গেটের বাইরে কেঁদেছেন তাসনুর। তার আরেক চাচাতো ভাই শামীমও নিখোঁজ রয়েছেন।
রূপগঞ্জে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন তাসনুর। তিন মাস আগে গ্রামের বাড়ি ভোলা থেকে আদরের একমাত্র ভাই মহিউদ্দিনকে স্থানীয় এক কন্ট্রাকটরের মাধ্যমে রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় কাজে দিয়েছিলেন তিনি।
তাসনুর বেগম বলেন, কারখানায় আগুনের খবর পেয়ে ভাইদের মোবাইলে ফোন দিয়েছি। প্রথমে মোবাইল বাজলেও তারা ধরেনি। কিছুক্ষণ পর থেকে ফোন বন্ধ পেয়েছি। রাত ৯টা থেকে কারখানায় ও হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করছি। না পেয়ে অপেক্ষা করছি।
তার মতো আগুনে পুড়ে যাওয়া ওই ভবনের চারপাশে অপেক্ষা করছেন আরোও অনেকের স্বজনরা। কেউ-কেউ বিলাপ করছেন। আবার অনেকে নীরব হয়ে বসে রয়েছেন। আবার কখনো ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের কাছে তথ্যের জন্য ছুটে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে রূপগঞ্জের ভুলতার কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানির কার্টন কারখানায় এ আগুন লাগে। আগুন নেভাতে অল্প সময়ের মধ্যেই সেখানে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট কাজ শুরু করে।
এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ৪৯ টি দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। আর বৃহস্পতিবার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ নিয়ে মৃতের সংখা গিয়ে দাড়াল ৫২ জনের।