১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সন্ত্রাসী সেলিম সরকারের নির্যাতনে দুই বৃদ্ধ আহত; অতিষ্ঠ সোনারগাঁও নয়াপুর বাসী

  • ০৫:৩৬:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৮৮৯

স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ কাঠালিয়া পাড়ার সেলিম সরকার (সাঈদ আহাম্মেদ সেলিম)‘র বিরুদ্ধে সোনারগাঁ সাদিপুর ইউনিয়ন ও নয়াপুর বাসীরা অত্যাচার-জুলুম-নির্যাতন-চাঁদাবাজি-দখলবাজীর অভিযোগ তোলেছেন।

গত ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় সেলিম সরকারের নির্যাতনের শিকার হন নয়াপুর আদর্শ সুপার মার্কেট সমিতির উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান (৬৫) ও সহ-সভাপতি খন্দকার রাশেদুল ইসলাম শামীম (৪০)।

ঘটনাটির সূত্রপাত হয় নয়াপুর নির্মানাধীন আর্দশ সুপার মার্কেটকে কেন্দ্র করে। সোনারগাঁ নয়াপুর এলাকায় ১৫১ জন সদস্য মিলে প্রত্যেক সদস্যরা তাদের পরিশ্রমের শেষ সম্বল একত্রিত করে নয়াপুর বাসস্ট্যান্ডের কিছুটা দূরত্বে তারা যৌথভাবে ১৬০শতাংশ জমি ক্রয় করেন। যাতে তাদের সূদুর ভবিষ্যতে সন্তান ও পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে না পরে।

এই জমির টাকা যোগাড় করতে অনেকে তাদের স্ত্রীর গহনা বিক্রি করেছেন, কেউবা গ্রামের পালন করা গরু ছাগল বিক্রি করেছেন, অনেকে আছেন যারা বিদেশের মাটিতে ঘাম ঝরিয়ে কষ্ট করে টাকা উপার্জন করেছেন, তারা তাদের সর্বস্ব দিয়ে এই জমিতে বিনিয়োগ করেছেন। এবং তারা সঠিক নিয়ম মেনে জমির দলিল, খারিজ নামা, সময় মতো কর প্রদান করছেন।

কিন্তু তারা সকল আইন শৃঙ্খলা মেনে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাদের মালিকানাধীন জমিতে ভবন নির্মান করতে গেলে সেলিম সরকার তার সন্ত্রাসী দল নিয়ে এসে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু মার্কেট কমিটির উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান (৬৫) চাঁদা দিবে না বলে সরাসরি জানিয়ে দেন।

এরই পরিপেক্ষিতে সেলিম সরকার তাকে বেধরক মারধর করতে থাকেন। আতিকুর রহমান ৬৫ বছর বয়সী একজন বয়োজ্যেষ্ঠ লোক, তার দাড়ি ধরে টেনে হিচড়ে চামড়া সহ দাড়ি তুলে ফেলেন ও সেলিমের ছেলে সালমান সরকার বাঁশ দিয়ে তাকে পেটাতে থাকেন।

এমতাবস্থায় সভাপতিকে বাঁচাতে কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার রাশেদুল ইসলাম শামীম তাদের মারামারি থামাতে যান, কিন্তু সেলিম সরকার ও তার ছেলে মিলে খন্দকার রাশেদুল ইসলাম শামীমকে মেরে তার বুকের হাড় ভেঙে ফেলেন এবং চোখ রক্তাক্ত করে। তারা নিজেদের বাঁচাতে মার্কেট সমিতির অফিসে ঢুকলে, বাহির থেকে দরজা লাগিয়ে সেলিম সরকারের সন্ত্রাসী দল আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভুক্তভোগীরা ‘৯৯৯’এ কল করলে তৎক্ষনাৎ পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করেন।

এসময় সেলিম সরকার ও তার ছেলে সালমান সরকার পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসী সেলিম সরকারের নির্যাতন-অত্যাচর থেকে রেহাই পেতে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সোনারগাঁয়ের বরাব বাজার ললাটি এলাকার মৃত আঃ মজিদ এর ছেলে ভুক্তভোগী মোঃ আতিকুর রহমান(৬০) বাদী হয়ে ২২ জনের নাম ও ৩০/৪০ জননের অজ্ঞাত নামে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন।

সেলিম সরকার যে তাদের উপর হামলা করেছেন সে প্রমান স্বরুপ ভুক্তভোগীরা সিসি ফুটেজ ও মোবাইলে ধারনকৃত ফুটেজ সংযুক্ত করেছেন। এছাড়াও এই অভিযোগ সত্য প্রমানিত হওয়ায় সেলিম সরকারকে বিএনপির দল থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন।

এছাড়া এলাকাবাসীর সাক্ষাৎকার নিয়ে জানা যায় সেলিম সরকার বিভিন্ন দোকান থেকে খাবার বাকি নিয়ে আর তা শোধ করেন না, টাকা চাইলে দোকানদারকে মারধর করেন। এছাড়া ও সে এলাকার দোকান থেকে প্রতিদিন চাঁদা তুলে নিয়ে যায়। যে তার মুখের উপর কথা বলেন তাকে নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে জানান এলাকার সাধারন মানুষ।

সেলিম সরকারের নামে বিভিন্ন থানায় ২০টিরও অধিক মামলা রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য তার নিজের স্ত্রী কতৃক হওয়া নারী নির্যাতন মামলা। গত কিছু বছর আগে সে তার স্ত্রীকে মারধর করে অর্ধমৃত অবস্থায় পাটিতে মুড়িয়ে রাস্তায় ফেলে যান, তখন পুলিশ মহিলাটিকে উদ্ধার করেন ও মামলা দায়ের করা হয়।এছাড়া এলাকার সাধারন মানুষকে অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের জমি, বাড়ী দখল করার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

এলাকার স্থানীয় মুরব্বিরা জানান যে, এলাকার মাদকাসক্ত যুবকদের নেতৃত্ব দেন সেলিম বাহিনী শুধু তাই নয় পরোক্ষভাবে মাদক ব্যবসায় জড়িত আছে বলে এলাকাবাসী জানান। এখানেই শেষ নয় চুরি, ছিনতাই ও রাতের আধারে ডাকাতির মতো ভয়ংকর সকল অপরাধের সঙ্গে জরিত আছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তবে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলে নির্যাতনের জোর জুলুমের শিকার হতে হয় বলে জানান সাধারন মানুষ। এই সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে এলাকাবাসী রেহাই পায়নি।

এলাকাবাসীর দাবি সেলিম সরকারের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক। তারা সেলিম সরকার ও তার দলের বিচার চেয়ে এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যৌথ-বাহিনীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

সংবাদটি ▼ শেয়ার করুন

👍ফেসবুকে আলোকিত শীতলক্ষ্যা

সন্ত্রাসী সেলিম সরকারের নির্যাতনে দুই বৃদ্ধ আহত; অতিষ্ঠ সোনারগাঁও নয়াপুর বাসী

০৫:৩৬:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ কাঠালিয়া পাড়ার সেলিম সরকার (সাঈদ আহাম্মেদ সেলিম)‘র বিরুদ্ধে সোনারগাঁ সাদিপুর ইউনিয়ন ও নয়াপুর বাসীরা অত্যাচার-জুলুম-নির্যাতন-চাঁদাবাজি-দখলবাজীর অভিযোগ তোলেছেন।

গত ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় সেলিম সরকারের নির্যাতনের শিকার হন নয়াপুর আদর্শ সুপার মার্কেট সমিতির উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান (৬৫) ও সহ-সভাপতি খন্দকার রাশেদুল ইসলাম শামীম (৪০)।

ঘটনাটির সূত্রপাত হয় নয়াপুর নির্মানাধীন আর্দশ সুপার মার্কেটকে কেন্দ্র করে। সোনারগাঁ নয়াপুর এলাকায় ১৫১ জন সদস্য মিলে প্রত্যেক সদস্যরা তাদের পরিশ্রমের শেষ সম্বল একত্রিত করে নয়াপুর বাসস্ট্যান্ডের কিছুটা দূরত্বে তারা যৌথভাবে ১৬০শতাংশ জমি ক্রয় করেন। যাতে তাদের সূদুর ভবিষ্যতে সন্তান ও পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে না পরে।

এই জমির টাকা যোগাড় করতে অনেকে তাদের স্ত্রীর গহনা বিক্রি করেছেন, কেউবা গ্রামের পালন করা গরু ছাগল বিক্রি করেছেন, অনেকে আছেন যারা বিদেশের মাটিতে ঘাম ঝরিয়ে কষ্ট করে টাকা উপার্জন করেছেন, তারা তাদের সর্বস্ব দিয়ে এই জমিতে বিনিয়োগ করেছেন। এবং তারা সঠিক নিয়ম মেনে জমির দলিল, খারিজ নামা, সময় মতো কর প্রদান করছেন।

কিন্তু তারা সকল আইন শৃঙ্খলা মেনে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাদের মালিকানাধীন জমিতে ভবন নির্মান করতে গেলে সেলিম সরকার তার সন্ত্রাসী দল নিয়ে এসে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু মার্কেট কমিটির উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান (৬৫) চাঁদা দিবে না বলে সরাসরি জানিয়ে দেন।

এরই পরিপেক্ষিতে সেলিম সরকার তাকে বেধরক মারধর করতে থাকেন। আতিকুর রহমান ৬৫ বছর বয়সী একজন বয়োজ্যেষ্ঠ লোক, তার দাড়ি ধরে টেনে হিচড়ে চামড়া সহ দাড়ি তুলে ফেলেন ও সেলিমের ছেলে সালমান সরকার বাঁশ দিয়ে তাকে পেটাতে থাকেন।

এমতাবস্থায় সভাপতিকে বাঁচাতে কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার রাশেদুল ইসলাম শামীম তাদের মারামারি থামাতে যান, কিন্তু সেলিম সরকার ও তার ছেলে মিলে খন্দকার রাশেদুল ইসলাম শামীমকে মেরে তার বুকের হাড় ভেঙে ফেলেন এবং চোখ রক্তাক্ত করে। তারা নিজেদের বাঁচাতে মার্কেট সমিতির অফিসে ঢুকলে, বাহির থেকে দরজা লাগিয়ে সেলিম সরকারের সন্ত্রাসী দল আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভুক্তভোগীরা ‘৯৯৯’এ কল করলে তৎক্ষনাৎ পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করেন।

এসময় সেলিম সরকার ও তার ছেলে সালমান সরকার পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসী সেলিম সরকারের নির্যাতন-অত্যাচর থেকে রেহাই পেতে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সোনারগাঁয়ের বরাব বাজার ললাটি এলাকার মৃত আঃ মজিদ এর ছেলে ভুক্তভোগী মোঃ আতিকুর রহমান(৬০) বাদী হয়ে ২২ জনের নাম ও ৩০/৪০ জননের অজ্ঞাত নামে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন।

সেলিম সরকার যে তাদের উপর হামলা করেছেন সে প্রমান স্বরুপ ভুক্তভোগীরা সিসি ফুটেজ ও মোবাইলে ধারনকৃত ফুটেজ সংযুক্ত করেছেন। এছাড়াও এই অভিযোগ সত্য প্রমানিত হওয়ায় সেলিম সরকারকে বিএনপির দল থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন।

এছাড়া এলাকাবাসীর সাক্ষাৎকার নিয়ে জানা যায় সেলিম সরকার বিভিন্ন দোকান থেকে খাবার বাকি নিয়ে আর তা শোধ করেন না, টাকা চাইলে দোকানদারকে মারধর করেন। এছাড়া ও সে এলাকার দোকান থেকে প্রতিদিন চাঁদা তুলে নিয়ে যায়। যে তার মুখের উপর কথা বলেন তাকে নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে জানান এলাকার সাধারন মানুষ।

সেলিম সরকারের নামে বিভিন্ন থানায় ২০টিরও অধিক মামলা রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য তার নিজের স্ত্রী কতৃক হওয়া নারী নির্যাতন মামলা। গত কিছু বছর আগে সে তার স্ত্রীকে মারধর করে অর্ধমৃত অবস্থায় পাটিতে মুড়িয়ে রাস্তায় ফেলে যান, তখন পুলিশ মহিলাটিকে উদ্ধার করেন ও মামলা দায়ের করা হয়।এছাড়া এলাকার সাধারন মানুষকে অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের জমি, বাড়ী দখল করার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।

এলাকার স্থানীয় মুরব্বিরা জানান যে, এলাকার মাদকাসক্ত যুবকদের নেতৃত্ব দেন সেলিম বাহিনী শুধু তাই নয় পরোক্ষভাবে মাদক ব্যবসায় জড়িত আছে বলে এলাকাবাসী জানান। এখানেই শেষ নয় চুরি, ছিনতাই ও রাতের আধারে ডাকাতির মতো ভয়ংকর সকল অপরাধের সঙ্গে জরিত আছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তবে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলে নির্যাতনের জোর জুলুমের শিকার হতে হয় বলে জানান সাধারন মানুষ। এই সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে এলাকাবাসী রেহাই পায়নি।

এলাকাবাসীর দাবি সেলিম সরকারের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক। তারা সেলিম সরকার ও তার দলের বিচার চেয়ে এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যৌথ-বাহিনীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

সংবাদটি ▼ শেয়ার করুন