সিদ্ধিরগঞ্জে রেন্ট-এ-কার স্ট্যান্ডে থেমে নেই সর্বদলীয় সুবিধাভোগী সালাউদ্দিনের চাঁদাবাজী
- ১১:১৬:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪
- / ৫৫৯
সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবীতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যায়। তার পর গঠিত হয় অন্তবর্তী সরকার। গণঅভ্যুত্থানের পর সারাদেশে সকল ধরনের চাঁদাবাজী ও নৈরাজ্য বন্ধ থাকলেও সিদ্ধিরগঞ্জে থেমে নেই বিগত দিনে সর্বদলীয় সুবিধাভোগী সরকারী জমিতে গড়ে তোলা চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের কথিত সভাপতি সালাউদ্দিনের চাঁদাবাজী।
তার শেল্টারদাতা আওয়ামীলীগ নেতারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলেও ভোল পাল্টে সে এখন নিজেকে বিএনপির লোক পরিচয় দিয়ে বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে স্ট্যান্ডে নতুন গাড়ী ভর্তি ফি নামে চাঁদা আদায় ও মাসিক চাঁদাবাজী। বুধবার (১৪ আগষ্ট) দুপুরে সরেজমিনে চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডে গিয়ে চাঁদাবাজীর বিষয়টি জানতে চাইলে এ প্রতিবেদকসহ উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সালাউদ্দিন অকপটে স্বীকার করেন।
চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সে দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এ স্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
এ স্ট্যান্ডে নতুন গাড়ী ভর্তি করতে হলে তাকে পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। এছাড়াও প্রতি মাসে হাইয়েস গাড়ী থেকে ১৫’শ টাকা, নোয়া গাড়ী থেকে ৮’শ টাকা এবং প্রাইভেট কারের জন্য ৫’শ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা দিয়ে তার কাছ থেকে টোকেন নিয়ে গাড়ী চালালে কোথায় ট্রাফিক পুলিশ ডিষ্টার্ভ করে না বলে জানান চালকরা।
এ স্ট্যান্ডের বিভিন্ন গাড়ি মালিকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে সে দলের নেতাদেরকে ম্যানেজ করে সালাউদ্দিন দাপটের সাথে জনবহুল শিমরাইল মোড়ে চাঁদাবাজি করছে। তার চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেও কোন লাভ হচ্ছেনা। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কয়েকজন নেতাকে ম্যানেজ করে সালাউদ্দিন এ স্ট্যান্ড থেকে মাসে কমপক্ষে তিন-চার লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে।
তাছাড়াও বদলি চালক দিয়ে এই রেন্ড-এ কারের গাড়ি দিয়ে মাদক পাচার হচ্ছে। সালাউদ্দিনের পরোক্ষ মদদে কিছু চালক আর্থিক লোভে মাদকের চালান আনা নেওয়া করছে। এই স্ট্যান্ডের একাধিক গাড়ি দেশের বিভিন্ন থানা এলাকায় মাদকসহ এবং ছিনতাই-ডাকাতি করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার বহু অভিযোগ রয়েছে।
এমনকি সালাউদ্দিনের নিজের গাড়িও বরিশাল জেলায় মাদকসহ ধরা পরেছিল কয়েক বছর আগে। একসময়ের সন্ত্রাসী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগী বিভিন্ন গাড়ির মালিকরা।
চিটাগাং রোড রেন্ট-এ কার স্ট্যান্ডের কথিত সভাপতি সালাউদ্দিন জানান, রাস্তায় গাড়ী চালাতে গিয়ে ট্রাফিক সার্জেন্টদের ঝামেলায় পড়তে হয়। এমনকি নাারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশকে প্রতিদিন একটি করে গাড়ী দিতে হত। মালিকদের সাথে কথা বলে একটি গাড়িকে সারা মাসের জন্য আমরা ডিবি পুলিশকে দিতাম। আর কমিটি থেকে ওই গাড়ীর মালিককে আমরা ৭০/৮০ হাজার টাকা ভাড়া বাবদ দেওয়া হত। এছাড়া থানা পুলিশ এবং মেহমান আসলে তাদের পিছনে খরচসহ আনুসাঙ্গিক অনেক খরচ রয়েছে। সেই জন্য এ চাঁদা উত্তোলন করা হয়।
নতুন গাড়ী ভর্তিতে কত টাকা নেয়া হয় জানতে চাইলে সালাউদ্দিন জানান, ৪/৫ হাজার টাকা নেয়া হয়। এ টাকা স্ট্যান্ড পরিচালনায় খরচ করা হয়।