০৩:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কোরবানীর ঈদকে ঘিরে ব্যস্ত কামার শিল্পীরা; ঝুঁকছে ক্রেতা

  • ১১:৩৩:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪
  • / ৩৯০

স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন ঈদুল আযহার আনন্দ যেন সবার ঘরের দরজায় কড়া নাড়ছে। আর এই ঈদকে সামনে রেখে কোরবানীর পশু জবাইয়ের অন্যতম উপকরণ চাকু, দা, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ লোহার বিভিন্ন সামগ্রীর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা ঝুঁকছেন ব্যস্ত কামারপল্লীতে, খুঁজছেন শান দেয়া চাপাতি, বটি ও ছুরি।

কেউ কেউ পরখ করে নিচ্ছেন ঠিকমতো হাঁড় কাটবে কিনা। আর ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে শেষ মুহুর্তে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন রূপগঞ্জের পেশাদার কামার শিল্পীরা। সারা বছর ধীরে সুস্থে কাজ করলেও এখন তারা যেন দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না। দিন-রাত টুং টাং শব্দে মুখরিত উপজেলার মুড়াপাড়া বাজার, সাওঘাট, ভুলতা, গোলাকান্দাইল, ইছাপুড়া, ভোলাব বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজার ও কামারপল্লীগুলো।

সরেজমিনে কামার পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, দা, ছুরি, চাকু, বঁটি, চাপাতিসহ নানা সরঞ্জামের পসরা সাজিয়ে রেখেছেন কামাররা। কেউ এসব বিক্রি করছেন,কেউ আবার নতুন যন্ত্রপাতি তৈরি করার জন্য লোহা গরম করছে, কেউ ঠাস ঠাস পিটাচ্ছে,কেউবা আবার ধূপিতে (হাওয়ার ফুলকি) আগুন দিচ্ছে। হাপর টানছ কেউ কেউ। হাপর দিয়ে কয়লার আগুনে লোহা পুড়িয়ে লাল করে ছোট-বড় নানা আকারের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ছুরি, বটি, দা, চাপাতিসহ নানা ধরনের যন্ত্রপাতি।

নতুন অস্ত্র বানানোর পাশাপাশি পুরনো অস্ত্র শান দেওয়ার কাজও করতে হচ্ছে সমানতালে। ক্লান্তহীনভাবে চলছে কাজ, কথা বলার ফুরসত নেই কারো। এত পরিশ্রমেও তাদের মুখে হাসি ফুটছে। কোরবানি পশু জবাইয়ের নানা সরঞ্জামের মধ্যে দা, ছুরি, বঁটি ও চাপাতির চাহিদাই বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

কামারদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা, দা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বটি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে ৬০০টাকা, চাপাতি ৯০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ অন্য বছরের তুলনায় দা, বটি, ছুরি, চাপাতির দাম একটু বেশি।

উপজেলার পোনাব এলাকার সতিষ কর্মকার জানান, কয়লা সংকট ও দা-বটি বানানোর লোহা আর ইস্পাতের দাম বেশি। ঈদ এলে আমাদের কেনা বেচা বেড়ে যায়। ঈদের দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে থেকে কাজের চাপে দম ফেলার অবস্থা থাকে না। তবে শানের কাজ বেশি। সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি আরো বলেন, যে হারে মানুুষ আসছে, সে হারে বিক্রি হচ্ছে না।

অনেকে দর দাম করে চলে যাচ্ছে। সতিষের মেয়ের জামাই টেংরারটেক এলাকার মাখন বিশ্বাস জানান, তিনি তার বাবার বাবার কাছ থেকে এ কাজ শিখে নিজে আলাদা দোকান খুলেছেন। তাদের আরো দুটি দোকান রয়েছে যা তার ভাই ও বাবা দেখভাল করেন। ঈদ এলেই তাদের বিক্রি দ্বিগুণ বেড়ে যায়। সারা বছর তারা এ দিনটির অপেক্ষায় থাকেন বলে জানান তিনি।

কামার নিহার রায় বলেন, ক্রেতারা গবাদি পশু কোরবানির জন্য যন্ত্রপাতি কিনতে ভিড় করছেন।
ইমরান আহমেদ নামে এক ক্রেতা বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার কিছুটা বেশি দামে এসব সামগ্রী কিনতে হচ্ছে।

আরিফ মিয়া নামে আরেক ক্রেতা জানান, তিনি কোরবানি উপলক্ষে কয়েকটি ছুরি ও দা কিনতে এসেছেন। এবার এসবের দাম অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি। দোকান ঘুরে দরদাম করছেন।

আয়েশা বেগম নামে এক গৃহিণী বলেন, কোরবানি পশুর মাংস কাটতে ধার বঁটির দরকার। বাসায় যে বঁটি আছে তাতে তেমন ধার নাই, এছাড়া সাইজেও ছোট। তাই বড় একটি বঁটি কিনতে আসছি।

সংবাদটি ▼ শেয়ার করুন

👍ফেসবুকে আলোকিত শীতলক্ষ্যা

কোরবানীর ঈদকে ঘিরে ব্যস্ত কামার শিল্পীরা; ঝুঁকছে ক্রেতা

১১:৩৩:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন ঈদুল আযহার আনন্দ যেন সবার ঘরের দরজায় কড়া নাড়ছে। আর এই ঈদকে সামনে রেখে কোরবানীর পশু জবাইয়ের অন্যতম উপকরণ চাকু, দা, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ লোহার বিভিন্ন সামগ্রীর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা ঝুঁকছেন ব্যস্ত কামারপল্লীতে, খুঁজছেন শান দেয়া চাপাতি, বটি ও ছুরি।

কেউ কেউ পরখ করে নিচ্ছেন ঠিকমতো হাঁড় কাটবে কিনা। আর ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে শেষ মুহুর্তে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন রূপগঞ্জের পেশাদার কামার শিল্পীরা। সারা বছর ধীরে সুস্থে কাজ করলেও এখন তারা যেন দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না। দিন-রাত টুং টাং শব্দে মুখরিত উপজেলার মুড়াপাড়া বাজার, সাওঘাট, ভুলতা, গোলাকান্দাইল, ইছাপুড়া, ভোলাব বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজার ও কামারপল্লীগুলো।

সরেজমিনে কামার পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, দা, ছুরি, চাকু, বঁটি, চাপাতিসহ নানা সরঞ্জামের পসরা সাজিয়ে রেখেছেন কামাররা। কেউ এসব বিক্রি করছেন,কেউ আবার নতুন যন্ত্রপাতি তৈরি করার জন্য লোহা গরম করছে, কেউ ঠাস ঠাস পিটাচ্ছে,কেউবা আবার ধূপিতে (হাওয়ার ফুলকি) আগুন দিচ্ছে। হাপর টানছ কেউ কেউ। হাপর দিয়ে কয়লার আগুনে লোহা পুড়িয়ে লাল করে ছোট-বড় নানা আকারের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ছুরি, বটি, দা, চাপাতিসহ নানা ধরনের যন্ত্রপাতি।

নতুন অস্ত্র বানানোর পাশাপাশি পুরনো অস্ত্র শান দেওয়ার কাজও করতে হচ্ছে সমানতালে। ক্লান্তহীনভাবে চলছে কাজ, কথা বলার ফুরসত নেই কারো। এত পরিশ্রমেও তাদের মুখে হাসি ফুটছে। কোরবানি পশু জবাইয়ের নানা সরঞ্জামের মধ্যে দা, ছুরি, বঁটি ও চাপাতির চাহিদাই বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

কামারদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা, দা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বটি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে ৬০০টাকা, চাপাতি ৯০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ অন্য বছরের তুলনায় দা, বটি, ছুরি, চাপাতির দাম একটু বেশি।

উপজেলার পোনাব এলাকার সতিষ কর্মকার জানান, কয়লা সংকট ও দা-বটি বানানোর লোহা আর ইস্পাতের দাম বেশি। ঈদ এলে আমাদের কেনা বেচা বেড়ে যায়। ঈদের দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে থেকে কাজের চাপে দম ফেলার অবস্থা থাকে না। তবে শানের কাজ বেশি। সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি আরো বলেন, যে হারে মানুুষ আসছে, সে হারে বিক্রি হচ্ছে না।

অনেকে দর দাম করে চলে যাচ্ছে। সতিষের মেয়ের জামাই টেংরারটেক এলাকার মাখন বিশ্বাস জানান, তিনি তার বাবার বাবার কাছ থেকে এ কাজ শিখে নিজে আলাদা দোকান খুলেছেন। তাদের আরো দুটি দোকান রয়েছে যা তার ভাই ও বাবা দেখভাল করেন। ঈদ এলেই তাদের বিক্রি দ্বিগুণ বেড়ে যায়। সারা বছর তারা এ দিনটির অপেক্ষায় থাকেন বলে জানান তিনি।

কামার নিহার রায় বলেন, ক্রেতারা গবাদি পশু কোরবানির জন্য যন্ত্রপাতি কিনতে ভিড় করছেন।
ইমরান আহমেদ নামে এক ক্রেতা বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার কিছুটা বেশি দামে এসব সামগ্রী কিনতে হচ্ছে।

আরিফ মিয়া নামে আরেক ক্রেতা জানান, তিনি কোরবানি উপলক্ষে কয়েকটি ছুরি ও দা কিনতে এসেছেন। এবার এসবের দাম অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি। দোকান ঘুরে দরদাম করছেন।

আয়েশা বেগম নামে এক গৃহিণী বলেন, কোরবানি পশুর মাংস কাটতে ধার বঁটির দরকার। বাসায় যে বঁটি আছে তাতে তেমন ধার নাই, এছাড়া সাইজেও ছোট। তাই বড় একটি বঁটি কিনতে আসছি।

সংবাদটি ▼ শেয়ার করুন