০৩:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চার বছর আগে অবসরে অতিরিক্ত আইজিপি আছাদুজ্জামান মিয়া, নির্বাচনের শোডাউনেও সেই গাড়ি

  • ১১:০২:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৫৭০

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার থাকাকালীন চার বছর আগে পুলিশের চাকরি থেকে অবসর। তবে এখনো নানাভাবে অফিসিয়াল সুযোগ-সুবিধাকে ব্যক্তিগত কাজে লাগাচ্ছেন সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি আছাদুজ্জামান মিয়া। সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি ফরিদপুর-১ আসনের নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে ব্যবহার করেছেন ডিএমপির গাড়ি।

পুলিশের নামে নিবন্ধিত একটি কার নিয়ে আছাদুজ্জামানকে দেখা গেছে ফরিদপুর-১ আসনের নির্বাচনী মাঠে। বাহনটির ওপর লাগানো ছিল ডিএমপির স্টিকারও। সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে সরকারি সুযোগ-সুবিধা বা গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ নেই। অথচ অবলীলায় সেই কাজটি করেছেন পুলিশের এই সাবেক কর্তা।

ভোটারদের প্রভাবিত করতে পেশাগত ক্ষমতার প্রভাব সৃষ্টি করা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি-২০০৮ এর ১৪ (১) (২) নম্বর বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সাবেক পুলিশ কর্তা আছাদুজ্জামানের বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী নির্বাচনের কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

গত ৭ জানুয়ারি ভোটের ৩ দিন আগে অর্থাৎ ৪ জানুয়ারি সোহান ইসলাম নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি ভিডিওচিত্র পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায়, কয়েকটি গাড়ি নিয়ে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে শোডাউন করেন আছাদুজ্জামান মিয়া।

শোডাউনের মাঝপথে একটি জায়গায় ঢাকা মেট্রো-গ ২৮-৭৪৩৬ নাম্বার প্লেটের গাড়িটি থামিয়ে শ্যালক হারিছুর রহমান সোহানের সঙ্গে কথা বলতেও দেখা যায় আছাদুজ্জামানকে।

বিআরটিএতে কারটির কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে ৩ সেপ্টেম্বর ডিএমপি কমিশনারের নামে ১৫০০ সিসির গাড়িটি পুলিশের নামে রেজিস্ট্রেশন হয়।

আছাদুজ্জামান মিয়া ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার ছিলেন ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টম্বর পর্যন্ত। এরপর তিনি পুলিশের চাকরি থেকে অবসর নেন। অর্থাৎ পুলিশের গাড়িটি ব্যক্তিগত কাজে লাগাচ্ছেন চার বছর আগে অবসরে যাওয়া ডিএমপির সাবেক এ কমিমশনার।

প্রশ্ন উঠেছে, সাবেক একজন অতিরিক্ত আইজিপি সরকারি গাড়ি নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করতে পারেন কিনা? তাছাড়া অবসরের পর তিনি কীভাবে ব্যক্তিগতভাবে পুলিশের নামে নিবন্ধিত গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন?

ফরিদপুর-১ আসনে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে শুধু পুলিশের গাড়ি ব্যবহারই নয়, নির্বাচনী প্রচারের সময় আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুরো নির্বাচনী এলাকা বিপর্যস্ত করে রাখার অভিযোগও উঠেছিল।

এছাড়া আছাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ভোটের কয়েকদিন আগে ভোটারদের মাঝে কালো টাকা বিতরণ এবং ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে নৌকায় ভোট দিতে ভোটারদের চাপ দেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি গাড়ি ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা তার পূর্বের পেশাগত পরিচয় নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করেছেন।

ভোটারদের প্রভাবিত করতে পেশাগত ক্ষমতার প্রভাব সৃষ্টি করা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি-২০০৮ এর ১৪ (১) (২) নম্বর বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী নির্বাচনের কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেই পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

সংবাদটি ▼ শেয়ার করুন

👍ফেসবুকে আলোকিত শীতলক্ষ্যা

চার বছর আগে অবসরে অতিরিক্ত আইজিপি আছাদুজ্জামান মিয়া, নির্বাচনের শোডাউনেও সেই গাড়ি

১১:০২:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার থাকাকালীন চার বছর আগে পুলিশের চাকরি থেকে অবসর। তবে এখনো নানাভাবে অফিসিয়াল সুযোগ-সুবিধাকে ব্যক্তিগত কাজে লাগাচ্ছেন সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি আছাদুজ্জামান মিয়া। সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি ফরিদপুর-১ আসনের নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে ব্যবহার করেছেন ডিএমপির গাড়ি।

পুলিশের নামে নিবন্ধিত একটি কার নিয়ে আছাদুজ্জামানকে দেখা গেছে ফরিদপুর-১ আসনের নির্বাচনী মাঠে। বাহনটির ওপর লাগানো ছিল ডিএমপির স্টিকারও। সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে সরকারি সুযোগ-সুবিধা বা গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ নেই। অথচ অবলীলায় সেই কাজটি করেছেন পুলিশের এই সাবেক কর্তা।

ভোটারদের প্রভাবিত করতে পেশাগত ক্ষমতার প্রভাব সৃষ্টি করা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি-২০০৮ এর ১৪ (১) (২) নম্বর বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সাবেক পুলিশ কর্তা আছাদুজ্জামানের বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী নির্বাচনের কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

গত ৭ জানুয়ারি ভোটের ৩ দিন আগে অর্থাৎ ৪ জানুয়ারি সোহান ইসলাম নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি ভিডিওচিত্র পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায়, কয়েকটি গাড়ি নিয়ে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে শোডাউন করেন আছাদুজ্জামান মিয়া।

শোডাউনের মাঝপথে একটি জায়গায় ঢাকা মেট্রো-গ ২৮-৭৪৩৬ নাম্বার প্লেটের গাড়িটি থামিয়ে শ্যালক হারিছুর রহমান সোহানের সঙ্গে কথা বলতেও দেখা যায় আছাদুজ্জামানকে।

বিআরটিএতে কারটির কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে ৩ সেপ্টেম্বর ডিএমপি কমিশনারের নামে ১৫০০ সিসির গাড়িটি পুলিশের নামে রেজিস্ট্রেশন হয়।

আছাদুজ্জামান মিয়া ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার ছিলেন ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টম্বর পর্যন্ত। এরপর তিনি পুলিশের চাকরি থেকে অবসর নেন। অর্থাৎ পুলিশের গাড়িটি ব্যক্তিগত কাজে লাগাচ্ছেন চার বছর আগে অবসরে যাওয়া ডিএমপির সাবেক এ কমিমশনার।

প্রশ্ন উঠেছে, সাবেক একজন অতিরিক্ত আইজিপি সরকারি গাড়ি নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করতে পারেন কিনা? তাছাড়া অবসরের পর তিনি কীভাবে ব্যক্তিগতভাবে পুলিশের নামে নিবন্ধিত গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন?

ফরিদপুর-১ আসনে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে শুধু পুলিশের গাড়ি ব্যবহারই নয়, নির্বাচনী প্রচারের সময় আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুরো নির্বাচনী এলাকা বিপর্যস্ত করে রাখার অভিযোগও উঠেছিল।

এছাড়া আছাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ভোটের কয়েকদিন আগে ভোটারদের মাঝে কালো টাকা বিতরণ এবং ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে নৌকায় ভোট দিতে ভোটারদের চাপ দেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি গাড়ি ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা তার পূর্বের পেশাগত পরিচয় নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করেছেন।

ভোটারদের প্রভাবিত করতে পেশাগত ক্ষমতার প্রভাব সৃষ্টি করা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি-২০০৮ এর ১৪ (১) (২) নম্বর বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী নির্বাচনের কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেই পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

সংবাদটি ▼ শেয়ার করুন