১০:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোককারু শিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধন

  • ০৮:১১:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৪৫১

এস.কে মাসুদ রানা (আলোকিত শীতলক্ষ্যা) : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ যাদুঘরে মাসব্যাপী লোককারু শিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ হাসান এমপি।

সাংস্কৃতিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। এই জনপদ লড়াই করার জন্য সৃষ্টি হয়েছিল,এই জনপদ হার মানেনি। মুঘলদের সাথেও তারা লড়াই করেছে। বারো ভূইয়ার এক ভূইয়া এই সোনারগাঁয়ে ছিলেন। এই সোনারগাঁওয়ে মুক্তিযোদ্ধা যেমন জন্মেছে,সোনার মানুষ জন্মেছে। জাতির পিতা এই সোনারগাঁকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন বলেন শিল্পাচার্জ জয়নাল আবেদীদের হাত ধরে এই চারু ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই৷ ১৫ আগষ্টের সকল শহীদসহ ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই লোকশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাই আজ সোনারগাঁয়ের জনগণ বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। এই বাংলা আগে বাঙালি শাসন করেনি। পিতা তোমার নেতৃত্বে এই বাংলাদেশ বাঙালিরা শাসন করেছে। এই বাংলা স্বাধীন করতে তিতুমীর রক্ত দিয়েছে,সুভাস চন্দ্র বোস রক্ত দিয়েছে। তারা পারেনি বঙ্গবন্ধু অবশেষে পেরেছে। আমি বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। সেদিন সাত মার্চ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বঙ্গবন্ধুকে উৎসাহ দিয়েছিল। তার প্রতিও আমরা শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেছেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাস্তা এই সোনারগাঁয়ে তৈরি হয়েছিল,গ্রান্ড ট্র্যাংঙ্ক রোড। লোকশিল্প হাজার হাজার বছর ধরে এখানে চর্চা হচ্ছে। পৃথিবী যেভাবে আমাদের চেনে সেটাই আমাদের কালচার। এ এলাকার নাম বাংলাদেশে কেউ চেনে না এমন মানুষ নেই। এই এলাকার মানুষ মসলিন তৈরি করেছিল। সারা পৃথিবী সোনারগাঁ কে চেনে। এখানকার জনগনের অনেক দাবী আমাদের প্রতিমন্ত্রীর কাছে। সোনারগাঁকে লালন করলে পুরো পৃথিবীতে নাম উজ্জ্বল হয়।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত বলেন,আপনারা জানেন এই প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের এই প্রতিষ্ঠান। তিনি চেয়েছিলেন সারা বাংলার সমস্ত শিল্প কাজ আমরা এক জায়গায় এনে উপহার দিব। তবে জোট সরকারের কারনে তা বানচাল হয়ে যায়। এ প্রতিষ্ঠান তাদের জন্য লুটপাটের আশ্রয়স্থল হয়ে যায়। পরবর্তীতে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এটা উন্নতি সাধন করে। পরে আবারও জামাত-বিএনপি এসে লুটপাট করে। আওয়ামীলীগের সময়ে এখানে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এখন এ প্রতিষ্ঠান নিয়ে সারা বাংলার মানুষ গর্ব করে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর,জেলা প্রশাসক মঞ্জরুল হাফিজ,নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ-আল-কায়সার,সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সোনারগাঁ পৌরসভার মেয়র মোঃ সাদেকুর রহমান,বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ওসমান গনিসহ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, এ বছর সোনারগাঁয়ের কারুশিল্পের কারুকাজ, হাতি ঘোড়া, মমী পুতুলের বর্ণালী-বাহারি পণ্য, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী,সোনারগাঁয়ের বাহারি জামদানি শিল্প,বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র,কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প,ঢাকার কাগজের শিল্প,রাজশাহীর মৃৎশিল্প -মাটির চায়ের কাপ,শখের হাঁড়ি,বাটিক শিল্প,খাদিশিল্প,মণিপুরী তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প,টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য,সিলেটের বেতশিল্প,চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনিকাঁথা,কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা পুতুল,খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য,মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প,ঠাকুরগাঁয়ের বাশেঁর কারুশিল্প,মাগুড়া ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প,চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা,পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলংকার শিল্প, নাগরদোলা,বায়স্কোপ ও মিঠাই মন্ডার পসরা থাকবে ষ্টলগুলোতে।

মাসব্যাপী লোকজ উৎসবে প্রতিদিন বাউল গান, পালাগান,যাত্রাপালা, লালনগীতি,ভাওয়াইয়া,ভাটিয়ালি, জারি সারি,হাছন রাজার গানসহ গ্রামীণ খেলা,সাপের খেলা,লাঠি খেলা,ঘুড়ি ওড়ানো,পিঠা প্রদর্শনীর আয়োজন থাকছে।

সংবাদটি ▼ শেয়ার করুন

👍ফেসবুকে আলোকিত শীতলক্ষ্যা

সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোককারু শিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধন

০৮:১১:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

এস.কে মাসুদ রানা (আলোকিত শীতলক্ষ্যা) : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ যাদুঘরে মাসব্যাপী লোককারু শিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ হাসান এমপি।

সাংস্কৃতিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। এই জনপদ লড়াই করার জন্য সৃষ্টি হয়েছিল,এই জনপদ হার মানেনি। মুঘলদের সাথেও তারা লড়াই করেছে। বারো ভূইয়ার এক ভূইয়া এই সোনারগাঁয়ে ছিলেন। এই সোনারগাঁওয়ে মুক্তিযোদ্ধা যেমন জন্মেছে,সোনার মানুষ জন্মেছে। জাতির পিতা এই সোনারগাঁকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন বলেন শিল্পাচার্জ জয়নাল আবেদীদের হাত ধরে এই চারু ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই৷ ১৫ আগষ্টের সকল শহীদসহ ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই লোকশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাই আজ সোনারগাঁয়ের জনগণ বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। এই বাংলা আগে বাঙালি শাসন করেনি। পিতা তোমার নেতৃত্বে এই বাংলাদেশ বাঙালিরা শাসন করেছে। এই বাংলা স্বাধীন করতে তিতুমীর রক্ত দিয়েছে,সুভাস চন্দ্র বোস রক্ত দিয়েছে। তারা পারেনি বঙ্গবন্ধু অবশেষে পেরেছে। আমি বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। সেদিন সাত মার্চ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বঙ্গবন্ধুকে উৎসাহ দিয়েছিল। তার প্রতিও আমরা শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেছেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাস্তা এই সোনারগাঁয়ে তৈরি হয়েছিল,গ্রান্ড ট্র্যাংঙ্ক রোড। লোকশিল্প হাজার হাজার বছর ধরে এখানে চর্চা হচ্ছে। পৃথিবী যেভাবে আমাদের চেনে সেটাই আমাদের কালচার। এ এলাকার নাম বাংলাদেশে কেউ চেনে না এমন মানুষ নেই। এই এলাকার মানুষ মসলিন তৈরি করেছিল। সারা পৃথিবী সোনারগাঁ কে চেনে। এখানকার জনগনের অনেক দাবী আমাদের প্রতিমন্ত্রীর কাছে। সোনারগাঁকে লালন করলে পুরো পৃথিবীতে নাম উজ্জ্বল হয়।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত বলেন,আপনারা জানেন এই প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের এই প্রতিষ্ঠান। তিনি চেয়েছিলেন সারা বাংলার সমস্ত শিল্প কাজ আমরা এক জায়গায় এনে উপহার দিব। তবে জোট সরকারের কারনে তা বানচাল হয়ে যায়। এ প্রতিষ্ঠান তাদের জন্য লুটপাটের আশ্রয়স্থল হয়ে যায়। পরবর্তীতে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এটা উন্নতি সাধন করে। পরে আবারও জামাত-বিএনপি এসে লুটপাট করে। আওয়ামীলীগের সময়ে এখানে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এখন এ প্রতিষ্ঠান নিয়ে সারা বাংলার মানুষ গর্ব করে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর,জেলা প্রশাসক মঞ্জরুল হাফিজ,নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ-আল-কায়সার,সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সোনারগাঁ পৌরসভার মেয়র মোঃ সাদেকুর রহমান,বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ওসমান গনিসহ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, এ বছর সোনারগাঁয়ের কারুশিল্পের কারুকাজ, হাতি ঘোড়া, মমী পুতুলের বর্ণালী-বাহারি পণ্য, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী,সোনারগাঁয়ের বাহারি জামদানি শিল্প,বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র,কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প,ঢাকার কাগজের শিল্প,রাজশাহীর মৃৎশিল্প -মাটির চায়ের কাপ,শখের হাঁড়ি,বাটিক শিল্প,খাদিশিল্প,মণিপুরী তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প,টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য,সিলেটের বেতশিল্প,চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনিকাঁথা,কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা পুতুল,খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য,মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প,ঠাকুরগাঁয়ের বাশেঁর কারুশিল্প,মাগুড়া ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প,চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা,পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলংকার শিল্প, নাগরদোলা,বায়স্কোপ ও মিঠাই মন্ডার পসরা থাকবে ষ্টলগুলোতে।

মাসব্যাপী লোকজ উৎসবে প্রতিদিন বাউল গান, পালাগান,যাত্রাপালা, লালনগীতি,ভাওয়াইয়া,ভাটিয়ালি, জারি সারি,হাছন রাজার গানসহ গ্রামীণ খেলা,সাপের খেলা,লাঠি খেলা,ঘুড়ি ওড়ানো,পিঠা প্রদর্শনীর আয়োজন থাকছে।

সংবাদটি ▼ শেয়ার করুন