নারায়ণগঞ্জ ০৬:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বোচ্চ সম্মানজনক স্বাধীনতা পুরস্কার- প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

 অনলাইন ভার্সন
  • ০৫:৩০:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর ২০২০
  • / ৪৮৫

"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

আলোকিত শীতলক্ষ্যা রিপোর্ট : বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতা পুরস্কারে (২০২০) মনোনীত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-১ রূপগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক।

বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মানজনক এই পুরস্কার বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক গ্রহণ করেছেন। সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক .ম মোজাম্মেল হকের কাছ থেকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০’ গ্রহণ করেন গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন স্যাটেলাইট টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইনে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

প্রসঙ্গত গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক ১৯৪৮ সালের ১৪ আগস্ট বৃহত্তর ঢাকা জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম গোলাম কিবরিয়া গাজী। মায়ের নাম শামসুনেচ্ছা বেগম। তিনি পড়াশুনা শুরু করেন পুরান ঢাকার বিদ্যাপিঠে। মাধ্যমিক পাস করার পর ভর্তি হন নটরডেম কলেজে। পরে ১৯৬৮ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। ছাত্র থাকা কালীন সময়ে গোলাম দস্তগীর গাজী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নিবার্চন, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এর সব ঘটনায় জীবনবাজী রেখে লড়াই করেছেন তিনি।

ছাত্র অবস্থায় গোলাম দস্তগীর গাজী বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। তিনি ২ নং সেক্টরের অধীনে রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে ঢাকার শহরের প্রধান গেরিলা বাহিনী ক্র্যাক প্লাটুনের অন্যতম কমান্ডার ছিলেন। তার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযান সমূহের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলো ঢাকা ওয়াবদা ভবন গ্রেনেড হামলা, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বোমা বিস্ফোরণ, রামপুরার উলন ৩৩ কেভি বিদ্যুত স্টেশন ধ্বংস, রূপগঞ্জ উপজেলার ইছাপুরা এলাকায় এবং ঢাকার ত্রিমোহনীতে পাকিস্থান আর্মির সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করেছে। তিনি ছিলেন গেরিলা যোদ্ধা। ১৯৭১ সালে ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনারা ত্রিমোহনীত আক্রমন করলে গোলাম দস্তগীর গাজী গুলি চালাতে চালাতে সামনে এগিয়ে যান। পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটে। সেদিনের আক্রমনে ১২/১৩ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। ১৩ই ডিসেম্বর গোলাম দস্তগীর গাজীসহ মুক্তিযোদ্ধারা রূপগঞ্জকে শত্রু মুক্ত করে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে থাকলেও গোলাম দস্তগীর গাজী নিজ বুদ্ধিমত্তা, উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তি ও কর্মদক্ষতা কাজে লাগান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অবকাঠামো পুনর্গঠনে।

১৯৭৪ সালে দেশের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ও দেশের শিল্প খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্লাস্টিক ও রাবারজাত পণ্য উৎপাদনকারী কারখানা স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্ব পরিবারে হত্যা করলে গোলাম দস্তগীর গাজী বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিচার চেয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি ১৯৭৭ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা সিটি করর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে কাকরাইল, সিদ্ধেশ্বরী, মালিবাগ, মৌচাক, ইস্কাটন ও মগবাজার এলাকা থেকে কমিশনার নির্বাচিত হন। তিনি এফবিসিসিআইয়ের সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্রীড়া অঙ্গনে গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরাট অবদান রয়েছে। তিনি বিসিবির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। মানবসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য গোলাম দস্তগীর গত বছর মাদার তেরেসা পুরস্কার পেয়েছেন।

রাজনৈতিক জীবনের বহু চড়াই-উৎরাই পার করা গোলাম দস্তগীর গাজী ৯০-এর দশক থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকাবাসীর জন্য কাজ করতে শুরু করেন। আওয়ামীলীগের আন্দোলন সংগ্রামে গোলাম দস্তগীর গাজীর অবদান ভুলবার নয়। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামায়াতের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। আন্দোলন করতে গিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তিনি আন্দোলন ছেড়ে যান নাই। তিনি ওয়ান ইলেভেনের সময় কারাবন্দী শেখ হাসিনাকে মুক্তির মহানায়ক ছিলেন। তিনি নেত্রীর জন্য জেল খেটেছেন। ফখরুদ্দিন মঈনুদ্দিনের সরকার গোলাম দস্তগীর গাজীকে বলেছিলো শেখ হাসিনার নামে মিথ্যা দুর্নীতি মামলা দায়ের করতে । সে দিন গোলাম দস্তগীর গাজী সেনাবাহিনীকে বলেছিলো আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমি যুদ্ধ করেছি আমাকে মেরে ফেলুন তবু আমি শেখ হাসিনার নামে মামলা দিতে পারব না।

তখন সেনাবাহিনী অমানবিক নির্যাতন করেছিলো গোলাম দস্তগীর গাজীকে । ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ ১ আসনে গোলাম দস্তগীর গাজী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। সেই নির্বাচনে তিনি বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান কে প্রায় ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সবাইকে অবাক করে দেন।

২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৪ জন এমপি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের মধ্যে রূপগঞ্জে গোলাম দস্তগীর গাজী জনগণের ভোটের মাধ্যমে এমপি নির্বাচিত হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ১ লাখের অধিক ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী কে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। গোলাম দস্তগীর গাজীর পদচারণায় বদলে গেছে রূপগঞ্জের উন্নয়ন চিত্র। আওয়ামীলীগ সরকার তিন মেয়াদে রূপগঞ্জের উন্নয়নের জন্য যতগুলো প্রকল্প দিয়েছে তা সফল ভাবে বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। তার নামে নেই কোন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান কে ২ লাখের অধিক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে টানা তৃতীয় বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর নারায়ণগঞ্জে থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম মন্ত্রী দিয়েছে।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী হয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। বিতর্কের উর্ধ্বে থেকে তিনি কাজ করছেন। আর এ জন্য সকল মহলে তার আস্থা বাড়ছে। গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক তার কাজের জন্য স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যেমন দেশের জন্য কাজ করেছেন, এখন তিনি মন্ত্রী হয়েছে সেই রকম কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে তিনি পজেটিভ নারায়ণগঞ্জ গড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তার কাজে মুগ্ধ সবাই। মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি রূপগঞ্জ তথা নারায়ণগঞ্জবাসীকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মানজনক স্বাধীনতা পুরস্কার -২০২০ এনে দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকেসহ বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। দলে মধ্যে তার আস্থা বাড়ছে। তার কাছে নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রত্যাশাও বাড়ছে। সেই লক্ষ্যে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বর্তমানে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান। এছাড়া বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি, মালিক তিনি। তিনি ৮ বছর যাবত বাংলাদেশের শীর্ষ করদাতা। তার দুই ছেলে । তার বড় ছেলে গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক। তার ছোট ছেলে গাজী গোলাম আশরিয়া বাপ্পী এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক। গোলাম দস্তগীর গাজীর স্ত্রী হাছিনা গাজী তারাব পৌর সভার মেয়র।

এদিকে সরকার গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীককে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ায় নারায়ণগঞ্জবাসী আনন্দিত। তার শুভাকাঙ্খীরা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এছাড়া সরকারকে রূপগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক।

এদিকে করোনা ভাইরাসের প্রভাবের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে স্ব শরীরে উপস্থিত হতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতা পুরস্কার -২০২০ প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন , ভালো কাজের জন্য তারা স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধীদের পুরস্কিত করেছে জিয়াউর রহমান। আটক রাজাকারদের জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে সে। চিহ্নিত রাজাকারকে নাগরিকত্ব দিয়েছে, মন্ত্রী উপদেষ্টা বানিয়েছে। মন্ত্রী পরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য,সচিব সহ তারাব পৌরসভার মেয়র হাছিনা গাজী উপস্থিত ছিলেন।


"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

ফেসবুকে👍আপনার_বিজ্ঞাপন

সর্বোচ্চ সম্মানজনক স্বাধীনতা পুরস্কার- প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন

০৫:৩০:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর ২০২০
"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

আলোকিত শীতলক্ষ্যা রিপোর্ট : বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতা পুরস্কারে (২০২০) মনোনীত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-১ রূপগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক।

বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মানজনক এই পুরস্কার বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক গ্রহণ করেছেন। সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক .ম মোজাম্মেল হকের কাছ থেকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০’ গ্রহণ করেন গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন স্যাটেলাইট টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইনে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

প্রসঙ্গত গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক ১৯৪৮ সালের ১৪ আগস্ট বৃহত্তর ঢাকা জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম গোলাম কিবরিয়া গাজী। মায়ের নাম শামসুনেচ্ছা বেগম। তিনি পড়াশুনা শুরু করেন পুরান ঢাকার বিদ্যাপিঠে। মাধ্যমিক পাস করার পর ভর্তি হন নটরডেম কলেজে। পরে ১৯৬৮ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। ছাত্র থাকা কালীন সময়ে গোলাম দস্তগীর গাজী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নিবার্চন, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এর সব ঘটনায় জীবনবাজী রেখে লড়াই করেছেন তিনি।

ছাত্র অবস্থায় গোলাম দস্তগীর গাজী বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। তিনি ২ নং সেক্টরের অধীনে রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে ঢাকার শহরের প্রধান গেরিলা বাহিনী ক্র্যাক প্লাটুনের অন্যতম কমান্ডার ছিলেন। তার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযান সমূহের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলো ঢাকা ওয়াবদা ভবন গ্রেনেড হামলা, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বোমা বিস্ফোরণ, রামপুরার উলন ৩৩ কেভি বিদ্যুত স্টেশন ধ্বংস, রূপগঞ্জ উপজেলার ইছাপুরা এলাকায় এবং ঢাকার ত্রিমোহনীতে পাকিস্থান আর্মির সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করেছে। তিনি ছিলেন গেরিলা যোদ্ধা। ১৯৭১ সালে ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনারা ত্রিমোহনীত আক্রমন করলে গোলাম দস্তগীর গাজী গুলি চালাতে চালাতে সামনে এগিয়ে যান। পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটে। সেদিনের আক্রমনে ১২/১৩ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। ১৩ই ডিসেম্বর গোলাম দস্তগীর গাজীসহ মুক্তিযোদ্ধারা রূপগঞ্জকে শত্রু মুক্ত করে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে থাকলেও গোলাম দস্তগীর গাজী নিজ বুদ্ধিমত্তা, উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তি ও কর্মদক্ষতা কাজে লাগান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অবকাঠামো পুনর্গঠনে।

১৯৭৪ সালে দেশের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ও দেশের শিল্প খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্লাস্টিক ও রাবারজাত পণ্য উৎপাদনকারী কারখানা স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্ব পরিবারে হত্যা করলে গোলাম দস্তগীর গাজী বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিচার চেয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি ১৯৭৭ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা সিটি করর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে কাকরাইল, সিদ্ধেশ্বরী, মালিবাগ, মৌচাক, ইস্কাটন ও মগবাজার এলাকা থেকে কমিশনার নির্বাচিত হন। তিনি এফবিসিসিআইয়ের সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্রীড়া অঙ্গনে গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরাট অবদান রয়েছে। তিনি বিসিবির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। মানবসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য গোলাম দস্তগীর গত বছর মাদার তেরেসা পুরস্কার পেয়েছেন।

রাজনৈতিক জীবনের বহু চড়াই-উৎরাই পার করা গোলাম দস্তগীর গাজী ৯০-এর দশক থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকাবাসীর জন্য কাজ করতে শুরু করেন। আওয়ামীলীগের আন্দোলন সংগ্রামে গোলাম দস্তগীর গাজীর অবদান ভুলবার নয়। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামায়াতের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। আন্দোলন করতে গিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তিনি আন্দোলন ছেড়ে যান নাই। তিনি ওয়ান ইলেভেনের সময় কারাবন্দী শেখ হাসিনাকে মুক্তির মহানায়ক ছিলেন। তিনি নেত্রীর জন্য জেল খেটেছেন। ফখরুদ্দিন মঈনুদ্দিনের সরকার গোলাম দস্তগীর গাজীকে বলেছিলো শেখ হাসিনার নামে মিথ্যা দুর্নীতি মামলা দায়ের করতে । সে দিন গোলাম দস্তগীর গাজী সেনাবাহিনীকে বলেছিলো আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমি যুদ্ধ করেছি আমাকে মেরে ফেলুন তবু আমি শেখ হাসিনার নামে মামলা দিতে পারব না।

তখন সেনাবাহিনী অমানবিক নির্যাতন করেছিলো গোলাম দস্তগীর গাজীকে । ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ ১ আসনে গোলাম দস্তগীর গাজী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। সেই নির্বাচনে তিনি বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান কে প্রায় ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সবাইকে অবাক করে দেন।

২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৪ জন এমপি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের মধ্যে রূপগঞ্জে গোলাম দস্তগীর গাজী জনগণের ভোটের মাধ্যমে এমপি নির্বাচিত হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ১ লাখের অধিক ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী কে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। গোলাম দস্তগীর গাজীর পদচারণায় বদলে গেছে রূপগঞ্জের উন্নয়ন চিত্র। আওয়ামীলীগ সরকার তিন মেয়াদে রূপগঞ্জের উন্নয়নের জন্য যতগুলো প্রকল্প দিয়েছে তা সফল ভাবে বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। তার নামে নেই কোন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান কে ২ লাখের অধিক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে টানা তৃতীয় বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর নারায়ণগঞ্জে থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম মন্ত্রী দিয়েছে।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী হয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। বিতর্কের উর্ধ্বে থেকে তিনি কাজ করছেন। আর এ জন্য সকল মহলে তার আস্থা বাড়ছে। গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক তার কাজের জন্য স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যেমন দেশের জন্য কাজ করেছেন, এখন তিনি মন্ত্রী হয়েছে সেই রকম কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে তিনি পজেটিভ নারায়ণগঞ্জ গড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তার কাজে মুগ্ধ সবাই। মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি রূপগঞ্জ তথা নারায়ণগঞ্জবাসীকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মানজনক স্বাধীনতা পুরস্কার -২০২০ এনে দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকেসহ বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। দলে মধ্যে তার আস্থা বাড়ছে। তার কাছে নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রত্যাশাও বাড়ছে। সেই লক্ষ্যে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বর্তমানে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান। এছাড়া বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি, মালিক তিনি। তিনি ৮ বছর যাবত বাংলাদেশের শীর্ষ করদাতা। তার দুই ছেলে । তার বড় ছেলে গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক। তার ছোট ছেলে গাজী গোলাম আশরিয়া বাপ্পী এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক। গোলাম দস্তগীর গাজীর স্ত্রী হাছিনা গাজী তারাব পৌর সভার মেয়র।

এদিকে সরকার গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীককে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ায় নারায়ণগঞ্জবাসী আনন্দিত। তার শুভাকাঙ্খীরা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এছাড়া সরকারকে রূপগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক।

এদিকে করোনা ভাইরাসের প্রভাবের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে স্ব শরীরে উপস্থিত হতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতা পুরস্কার -২০২০ প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন , ভালো কাজের জন্য তারা স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধীদের পুরস্কিত করেছে জিয়াউর রহমান। আটক রাজাকারদের জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে সে। চিহ্নিত রাজাকারকে নাগরিকত্ব দিয়েছে, মন্ত্রী উপদেষ্টা বানিয়েছে। মন্ত্রী পরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য,সচিব সহ তারাব পৌরসভার মেয়র হাছিনা গাজী উপস্থিত ছিলেন।


"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"