নারায়ণগঞ্জ ০১:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় ঢাকার পরে নারায়ণগঞ্জের অবস্থা ভয়াবহ : শামীম ওসমান এমপি

 অনলাইন ভার্সন
  • ০২:৫১:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ মে ২০২০
  • / ৫২৮

"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

বিশেষ প্রতিনিধি আলোকিত শীতলক্ষ্যা : নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ খুব বেশি ইফেক্টেড (আক্রান্ত) হয়ে গেছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম দিকে একটিভ হওয়া উচিত ছিল। প্রথম দিকে একটিভ হয় নাই কিংবা বুঝে উঠতে পারেন নাই। সেখানে কিছুটা হতাশ হয়েছিলাম। আবার প্রধানমন্ত্রী যখন নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন তখন খুব স্বস্তি বোধ করি। অন্যান্য জেলার থেকে ঢাকার পরে নারায়ণগঞ্জের অবস্থা ভয়াবহ এটা সত্য।

বৃহস্পতিবার ৩০ এপ্রিল রাতে করোনার সঙ্গে লড়াই শিরোনামে নিউজ টুয়েন্টিফোর টেলিভিশনের লাইভ টকশো জনতন্ত্র গণতন্ত্র অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।

প্রচুর টেস্ট করাতে হবে,
করোনা টেস্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের প্রচুর পরিমাণে টেস্ট হওয়া দরকার। সেই কারণে নারায়ণগঞ্জে প্রথম বেসরকারিভাবে টেস্ট শুরু হয়েছে হাই স্কুলে জেকেজি কেয়ার নামে। এরপর নারায়ণগঞ্জ ৩০০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে যাতে টেস্ট করা যায় সে জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। আমি নারায়ণগঞ্জবাসীকে বলতে চাই একটু আগে ডিডি স্বাস্থ্য এর সাথে আমার কথা হয়েছে উনি আমাকে বলেছেন আগামী সোমবারের মধ্যে কার্যক্রম শুরু হবে এবং সেখানে আইসিইউ এবং ভেন্টিলেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিপূর্ণ চিকিৎসা দেওয়া হবে।

খাদ্য নিয়ে আমাদের সমস্যা হচ্ছে না,
শামীম ওসমান বলেন, লকডাউন তো ছিলই। কিন্তু লকডাউনটাকে ১০০ভাগ মানা সম্ভব হচ্ছিল না এই কারণে যে ভাসমান লোকগুলো যারা এখানে কাজ করতেন এরা যাবেন কোথায়? এরা কিন্তু মাঠে ছিলেন। মাঠে পুলিশ সেনাবাহিনী, র‌্যাব সবাই ছিল কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এরা কিন্তু সবাই ঘরে থাকতে পারছিলেন না। একটি জিনিস আমাদেরকে বুঝতে হবে এবং মানতে হবে আমাদের দেশে কিন্তু শতকরা ৭০ ভাগ মানুষ ৬ জনের পরিবার কিংবা ৭ বা ৮ জনের পরিবার। দুই রুমের একটি বাসায় থাকেন। একজন যদি অসুস্থ হন বাকি লোকগুলো যাবে কোথায়।

প্রধানমন্ত্রী বার বার বলছেন ঘরে থাকতে। খাদ্যটা কিন্তু আমাদের সমস্যা হচ্ছে না। সরকার থেকে আমরা খাদ্য পাচ্ছি। রাতের বেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নেতাকর্মীরা খাবার পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু আসলে যেটা হচ্ছে যতটুকু সচেতন হওয়া দরকার হয়তো এটা আমাদেরই ব্যর্থতা যে সেটুকু সচেতন হতে পারছি না। এখানেই সমস্যা হচ্ছে।

ত্রাণের জন্য সড়ক অবরোধে ভাসমান মানুষ,
ত্রাণ চেয়ে সড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা অবরোধ করছে এরাই হচ্ছে ভাসমান মানুষ। নারাণগঞ্জে এটি বেশি হচ্ছে। গার্মেন্টস কিংবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা না পারছে নারায়ণগঞ্জ থেকে বেরিয়ে যেতে না পারছে থাকতে। তাঁর এলাকায় গেলে হয়তো খাবার পেতো। যে কারণে ওএমএস এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে তারা এর আওতায় চলে আসবে। আইডি কার্ড না দেখে তাঁর প্রয়োজন আছে কি নাই দেখে সাহায্য করা হবে। খাবার বিতরণ করা কঠিন না। কিন্তু রাতের বেলায় করা খুব কঠিন কাজ। কারণ যিনি দিচ্ছেন তাঁরও জীবন আছে।

তিনজন জনপ্রতিনিধির জন্য সকল জনপ্রতিনিধদের দোষারোপ করতে পারি না,
চাল চুরির কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, জনপ্রতিনিধি যদি আপনি হিসাব করেন সাংসদ সহ ৫০হাজারের মত। এই ৫০হাজারের মধ্যে যদি ৩জন মানুষ ভুল করে এখানে তো আমরা টোটাল জনপ্রতিনিধিদেরকে দোষারোপ করতে পারি না। তবে কিছু কিছু লোকের কর্মকান্ডে আমরা যারা রাস্তা থেকে রাজনীতিতে উঠে এসেছি আমরা বিব্রত হই। আমার মনে হয় তাঁদের কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও বিব্রত করি। এই সময়টা রাজনীতি করার জন্য নয়। এটি মানুষের জন্য কিছু করার সময়। মানুষের জন্য যদি কিছু করতে হয় রাজনীতিবিদ না হয়ে মানুষ হয়ে করা প্রয়োজন।

করোনা মোকাবেলায় পরিবারের ঈদের বাজেট দিয়ে দিয়েছি,
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ যখন লকডাউন হলো আমার সহধর্মীনি এসে বলল যে ঈদের বাজেট কত? আমি বললাম যে কেন? ওনি বলল যে ঈদের বাজেটটা লাগবে। আমি বললাম ঠিক আছে। আমাদের বাজেটের সাথে আত্মীয় স্বজনের সাথে কথা বলে আরো বাজেট যোগাড় করল। যেদিন লকডাউন হলো এর দুই দিন পর থেকেই কিন্তু সে শুরু করলো একদম আয়ের মানুষের জন্য খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা। এরপর আমার ছেলেও করলো। ও মাস্ক দিল পিপিই দিলো, খাবার দিলো। এরপর আমি শুরু করলম এবং আমি এ পর্যন্ত যত জায়গায় ত্রাণ দিয়েছি কোনো ছবি তুলি নাই। দিনে দিলে ভীড় হয় তাই রাতে দিয়েছি। এই পর্যন্ত ২৫ হাজার মানুষের ঘরে খাবার দিয়েছি। আর সরকারের পক্ষ থেকে আমার নির্বাচনি এলাকায় আরো ৫০-৬০ হাজার পরিবারের খাবার এসেছে। অনেকেই কাজ করছে।


"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

ফেসবুকে👍আপনার_বিজ্ঞাপন

করোনায় ঢাকার পরে নারায়ণগঞ্জের অবস্থা ভয়াবহ : শামীম ওসমান এমপি

০২:৫১:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ মে ২০২০
"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

বিশেষ প্রতিনিধি আলোকিত শীতলক্ষ্যা : নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ খুব বেশি ইফেক্টেড (আক্রান্ত) হয়ে গেছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম দিকে একটিভ হওয়া উচিত ছিল। প্রথম দিকে একটিভ হয় নাই কিংবা বুঝে উঠতে পারেন নাই। সেখানে কিছুটা হতাশ হয়েছিলাম। আবার প্রধানমন্ত্রী যখন নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন তখন খুব স্বস্তি বোধ করি। অন্যান্য জেলার থেকে ঢাকার পরে নারায়ণগঞ্জের অবস্থা ভয়াবহ এটা সত্য।

বৃহস্পতিবার ৩০ এপ্রিল রাতে করোনার সঙ্গে লড়াই শিরোনামে নিউজ টুয়েন্টিফোর টেলিভিশনের লাইভ টকশো জনতন্ত্র গণতন্ত্র অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।

প্রচুর টেস্ট করাতে হবে,
করোনা টেস্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের প্রচুর পরিমাণে টেস্ট হওয়া দরকার। সেই কারণে নারায়ণগঞ্জে প্রথম বেসরকারিভাবে টেস্ট শুরু হয়েছে হাই স্কুলে জেকেজি কেয়ার নামে। এরপর নারায়ণগঞ্জ ৩০০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে যাতে টেস্ট করা যায় সে জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। আমি নারায়ণগঞ্জবাসীকে বলতে চাই একটু আগে ডিডি স্বাস্থ্য এর সাথে আমার কথা হয়েছে উনি আমাকে বলেছেন আগামী সোমবারের মধ্যে কার্যক্রম শুরু হবে এবং সেখানে আইসিইউ এবং ভেন্টিলেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিপূর্ণ চিকিৎসা দেওয়া হবে।

খাদ্য নিয়ে আমাদের সমস্যা হচ্ছে না,
শামীম ওসমান বলেন, লকডাউন তো ছিলই। কিন্তু লকডাউনটাকে ১০০ভাগ মানা সম্ভব হচ্ছিল না এই কারণে যে ভাসমান লোকগুলো যারা এখানে কাজ করতেন এরা যাবেন কোথায়? এরা কিন্তু মাঠে ছিলেন। মাঠে পুলিশ সেনাবাহিনী, র‌্যাব সবাই ছিল কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এরা কিন্তু সবাই ঘরে থাকতে পারছিলেন না। একটি জিনিস আমাদেরকে বুঝতে হবে এবং মানতে হবে আমাদের দেশে কিন্তু শতকরা ৭০ ভাগ মানুষ ৬ জনের পরিবার কিংবা ৭ বা ৮ জনের পরিবার। দুই রুমের একটি বাসায় থাকেন। একজন যদি অসুস্থ হন বাকি লোকগুলো যাবে কোথায়।

প্রধানমন্ত্রী বার বার বলছেন ঘরে থাকতে। খাদ্যটা কিন্তু আমাদের সমস্যা হচ্ছে না। সরকার থেকে আমরা খাদ্য পাচ্ছি। রাতের বেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নেতাকর্মীরা খাবার পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু আসলে যেটা হচ্ছে যতটুকু সচেতন হওয়া দরকার হয়তো এটা আমাদেরই ব্যর্থতা যে সেটুকু সচেতন হতে পারছি না। এখানেই সমস্যা হচ্ছে।

ত্রাণের জন্য সড়ক অবরোধে ভাসমান মানুষ,
ত্রাণ চেয়ে সড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা অবরোধ করছে এরাই হচ্ছে ভাসমান মানুষ। নারাণগঞ্জে এটি বেশি হচ্ছে। গার্মেন্টস কিংবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা না পারছে নারায়ণগঞ্জ থেকে বেরিয়ে যেতে না পারছে থাকতে। তাঁর এলাকায় গেলে হয়তো খাবার পেতো। যে কারণে ওএমএস এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে তারা এর আওতায় চলে আসবে। আইডি কার্ড না দেখে তাঁর প্রয়োজন আছে কি নাই দেখে সাহায্য করা হবে। খাবার বিতরণ করা কঠিন না। কিন্তু রাতের বেলায় করা খুব কঠিন কাজ। কারণ যিনি দিচ্ছেন তাঁরও জীবন আছে।

তিনজন জনপ্রতিনিধির জন্য সকল জনপ্রতিনিধদের দোষারোপ করতে পারি না,
চাল চুরির কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, জনপ্রতিনিধি যদি আপনি হিসাব করেন সাংসদ সহ ৫০হাজারের মত। এই ৫০হাজারের মধ্যে যদি ৩জন মানুষ ভুল করে এখানে তো আমরা টোটাল জনপ্রতিনিধিদেরকে দোষারোপ করতে পারি না। তবে কিছু কিছু লোকের কর্মকান্ডে আমরা যারা রাস্তা থেকে রাজনীতিতে উঠে এসেছি আমরা বিব্রত হই। আমার মনে হয় তাঁদের কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও বিব্রত করি। এই সময়টা রাজনীতি করার জন্য নয়। এটি মানুষের জন্য কিছু করার সময়। মানুষের জন্য যদি কিছু করতে হয় রাজনীতিবিদ না হয়ে মানুষ হয়ে করা প্রয়োজন।

করোনা মোকাবেলায় পরিবারের ঈদের বাজেট দিয়ে দিয়েছি,
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ যখন লকডাউন হলো আমার সহধর্মীনি এসে বলল যে ঈদের বাজেট কত? আমি বললাম যে কেন? ওনি বলল যে ঈদের বাজেটটা লাগবে। আমি বললাম ঠিক আছে। আমাদের বাজেটের সাথে আত্মীয় স্বজনের সাথে কথা বলে আরো বাজেট যোগাড় করল। যেদিন লকডাউন হলো এর দুই দিন পর থেকেই কিন্তু সে শুরু করলো একদম আয়ের মানুষের জন্য খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা। এরপর আমার ছেলেও করলো। ও মাস্ক দিল পিপিই দিলো, খাবার দিলো। এরপর আমি শুরু করলম এবং আমি এ পর্যন্ত যত জায়গায় ত্রাণ দিয়েছি কোনো ছবি তুলি নাই। দিনে দিলে ভীড় হয় তাই রাতে দিয়েছি। এই পর্যন্ত ২৫ হাজার মানুষের ঘরে খাবার দিয়েছি। আর সরকারের পক্ষ থেকে আমার নির্বাচনি এলাকায় আরো ৫০-৬০ হাজার পরিবারের খাবার এসেছে। অনেকেই কাজ করছে।


"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"