নারায়ণগঞ্জ ১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঠ্যবইয়ের বাণিজ্য কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলো, নির্ধারিত লাইব্রেরি থেকে উচ্চ মূল্য দিয়ে

 অনলাইন ভার্সন
  • ০৪:৩৪:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২০
  • / ৫০৩

"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

এস.কে মাসুদ রানা আলোকিত শীতলক্ষ্যা : নারায়নগঞ্জে জেলার ৭টি থানায় সহস্রাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে, সেখানে চলছে পাঠ্যবইয়ের জমজমাট বাণিজ্য।ভিবিন্ন উপঢৌকন, নগদ টাকাসহ নানা উপহার সামগ্রী নিয়ে এসব কিন্ডারগার্টেনে নিম্নমানের বই পাঠ্য করা হচ্ছে। আর এসব বই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।

এসব কিন্ডারগার্টেন গুলো যেসব লাইব্রেরি বা বই কোম্পানি নির্ধারণ করে দেবে সেসব লাইব্রেরি থেকে উচ্চ মূল্যে বই কিনতে হয়, নয়তো ওই কিন্ডারগার্টেনে পড়ানো হয় না। এতে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা বইয়ের বোঝায় মানসিক চাপে ভোগে।

বছরের শুরুতেই জেলার কিন্ডারগার্টেনে বিভিন্ন লাইব্রেরির মালিক ও কোম্পানির প্রতিনিধি গিয়ে তাদের সা থে আতাত করে নিম্নমানের বই পাঠ্য করানোর জন্য নগদ টাকা কিংবা উপহার দিয়ে থাকেন।কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা টাকা কিংবা উপহার নিয়ে এসব বই পাঠ্য করেন।

প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থী অনুপাতে টাকার অংক কমবেশি হয়। এর পরই শিক্ষার্থী কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি হলেই তাদেরকে একটি বইয়ের স্লিপ ধরিয়ে দেয়া হয়।নির্ধারিত লাইব্রেরি থেকে এসব বই কিনতে হয় উচ্চ মূল্য দিয়ে।যেসব বই ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা মূল্য। সে-সব বই কিনতে বাধ্য করা হয় ৭০০ থেকে দেড় হাজার টাকায় পর্যন্ত।ফলে বাধ্য হয়েই অভিভাবকরা এসব বই শিশুদের কিনে দেন। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে অনেক অখ্যাত কুখ্যাত লেখকের বইও পাঠ্য করা হয় টাকার বিনিময়ে।

প্লে থেকে নার্সারি কিংবা ক্লাস ওয়ানে শিশুদের ৭ থেকে ১০টি বই পড়তে হয়। অথচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ছাত্ররাই পড়ে মাত্র ৩টি বই। জেলার ১৫ থেকে ২০টি লাইব্রেরির মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি লাইব্রেরিতেই এসব পাঠ্যবই পাওয়াযায়।

কারণ তারাইপূর্বে কিন্ডারগার্টেনগুলোতে গিয়ে নগদ টাকা কিংবা উপহার দিয়ে বই পাঠ্য সিলেকশন করেছেন।এছাড়া এসব বই পড়াতে প্রাইভেট শিক্ষকদের কাছে পাঠাতে হয়। ৪ থেকে ৭ বছরের শিশু সকাল থেকে স্কুল এবং প্রাইভেট পড়তে গিয়ে শারীরিকভাবে ও মানসিক পর্যুদস্ত হয়ে পড়ছে। অনেকেই ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়ে।

নারায়নগঞ্জ জেলায় এসব কিন্ডারগার্টেনে মানসম্মত লেখাপড়া না থাকলেও আছে শিক্ষার্থীর পিঠে বইয়ের বোঝা।

এসব প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো ভালো শিক্ষক।যারা শিক্ষক তাদেরও প্রশিক্ষণ নেই।নেই ভালো কোনো বেতন-ভাতা। ফলে বাধ্য হয়েই কম যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক দিয়ে কিন্ডারগার্টেন চালাতে হয়।উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাগণ এসব প্রতিষ্ঠান দেখভালও করেন না।কারণ এগুলো যারা প্রতিষ্ঠা করেন তারাই এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক। তাদের নামকাওয়াস্তে একটি কমিটি থাকে।তাই তাদের ইচ্ছায়ই সব চলে।তাই এসব কিন্ডারগার্টেন আইনের আওতায় এনে একটি নীতিমালা কিংবা গাইডলাইনের মাধ্যমে চালানো এবং মানসম্মত ও শিশুদের সহনশীল বই পাঠ্য করার বিষয়েও তদারকির দাবি জানিয়েছে সচেতন অভিভাবকরা।

নাম না প্রকাশ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন একটি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীর এক অভিভাবক বলেন, মুখ দেখে ডাল-ভাত। বড় কর্মকর্তা কিংবা বড় নেতা হলে তার ছেলে-মেয়েরা ভালো নম্বর। যোগাযোগ কিংবা তদবির না থাকলে ভালো লিখেও ভালো নম্বর পায় না।

এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের বই দেয়া এবং সমাপনী পরীক্ষা নেয়া ছাড়া আর আমাদের কোনো তদারকি নেই। এগুলো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, কিন্ডারগার্টেনের নজরদারির আওতায় আনার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করে পত্র দেয়া হয়েছে।

ফেসবুকে👍আপনার_বিজ্ঞাপন

পাঠ্যবইয়ের বাণিজ্য কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলো, নির্ধারিত লাইব্রেরি থেকে উচ্চ মূল্য দিয়ে

০৪:৩৪:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২০
"সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন"

এস.কে মাসুদ রানা আলোকিত শীতলক্ষ্যা : নারায়নগঞ্জে জেলার ৭টি থানায় সহস্রাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে, সেখানে চলছে পাঠ্যবইয়ের জমজমাট বাণিজ্য।ভিবিন্ন উপঢৌকন, নগদ টাকাসহ নানা উপহার সামগ্রী নিয়ে এসব কিন্ডারগার্টেনে নিম্নমানের বই পাঠ্য করা হচ্ছে। আর এসব বই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।

এসব কিন্ডারগার্টেন গুলো যেসব লাইব্রেরি বা বই কোম্পানি নির্ধারণ করে দেবে সেসব লাইব্রেরি থেকে উচ্চ মূল্যে বই কিনতে হয়, নয়তো ওই কিন্ডারগার্টেনে পড়ানো হয় না। এতে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা বইয়ের বোঝায় মানসিক চাপে ভোগে।

বছরের শুরুতেই জেলার কিন্ডারগার্টেনে বিভিন্ন লাইব্রেরির মালিক ও কোম্পানির প্রতিনিধি গিয়ে তাদের সা থে আতাত করে নিম্নমানের বই পাঠ্য করানোর জন্য নগদ টাকা কিংবা উপহার দিয়ে থাকেন।কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা টাকা কিংবা উপহার নিয়ে এসব বই পাঠ্য করেন।

প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থী অনুপাতে টাকার অংক কমবেশি হয়। এর পরই শিক্ষার্থী কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি হলেই তাদেরকে একটি বইয়ের স্লিপ ধরিয়ে দেয়া হয়।নির্ধারিত লাইব্রেরি থেকে এসব বই কিনতে হয় উচ্চ মূল্য দিয়ে।যেসব বই ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা মূল্য। সে-সব বই কিনতে বাধ্য করা হয় ৭০০ থেকে দেড় হাজার টাকায় পর্যন্ত।ফলে বাধ্য হয়েই অভিভাবকরা এসব বই শিশুদের কিনে দেন। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে অনেক অখ্যাত কুখ্যাত লেখকের বইও পাঠ্য করা হয় টাকার বিনিময়ে।

প্লে থেকে নার্সারি কিংবা ক্লাস ওয়ানে শিশুদের ৭ থেকে ১০টি বই পড়তে হয়। অথচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ছাত্ররাই পড়ে মাত্র ৩টি বই। জেলার ১৫ থেকে ২০টি লাইব্রেরির মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি লাইব্রেরিতেই এসব পাঠ্যবই পাওয়াযায়।

কারণ তারাইপূর্বে কিন্ডারগার্টেনগুলোতে গিয়ে নগদ টাকা কিংবা উপহার দিয়ে বই পাঠ্য সিলেকশন করেছেন।এছাড়া এসব বই পড়াতে প্রাইভেট শিক্ষকদের কাছে পাঠাতে হয়। ৪ থেকে ৭ বছরের শিশু সকাল থেকে স্কুল এবং প্রাইভেট পড়তে গিয়ে শারীরিকভাবে ও মানসিক পর্যুদস্ত হয়ে পড়ছে। অনেকেই ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়ে।

নারায়নগঞ্জ জেলায় এসব কিন্ডারগার্টেনে মানসম্মত লেখাপড়া না থাকলেও আছে শিক্ষার্থীর পিঠে বইয়ের বোঝা।

এসব প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো ভালো শিক্ষক।যারা শিক্ষক তাদেরও প্রশিক্ষণ নেই।নেই ভালো কোনো বেতন-ভাতা। ফলে বাধ্য হয়েই কম যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক দিয়ে কিন্ডারগার্টেন চালাতে হয়।উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাগণ এসব প্রতিষ্ঠান দেখভালও করেন না।কারণ এগুলো যারা প্রতিষ্ঠা করেন তারাই এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক। তাদের নামকাওয়াস্তে একটি কমিটি থাকে।তাই তাদের ইচ্ছায়ই সব চলে।তাই এসব কিন্ডারগার্টেন আইনের আওতায় এনে একটি নীতিমালা কিংবা গাইডলাইনের মাধ্যমে চালানো এবং মানসম্মত ও শিশুদের সহনশীল বই পাঠ্য করার বিষয়েও তদারকির দাবি জানিয়েছে সচেতন অভিভাবকরা।

নাম না প্রকাশ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন একটি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীর এক অভিভাবক বলেন, মুখ দেখে ডাল-ভাত। বড় কর্মকর্তা কিংবা বড় নেতা হলে তার ছেলে-মেয়েরা ভালো নম্বর। যোগাযোগ কিংবা তদবির না থাকলে ভালো লিখেও ভালো নম্বর পায় না।

এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের বই দেয়া এবং সমাপনী পরীক্ষা নেয়া ছাড়া আর আমাদের কোনো তদারকি নেই। এগুলো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, কিন্ডারগার্টেনের নজরদারির আওতায় আনার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করে পত্র দেয়া হয়েছে।